‘বুল্লি বাই’ অ্যাপের মাধ্যমে আসলে হচ্ছিল কী?
নতুন বছরের শুরুতেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু ‘বুল্লি বাই’ অ্যাপ। অ্যাপটি নিষিদ্ধ হয়েছে জানাজানি হওয়ার পরও এ অ্যাপের মাধ্যমে ভারতের মুসলিম মহিলাদের ছবি ও বিবরণ পোস্ট করে ‘নিলামে’ তোলা হচ্ছে। এ নিয়ে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দেশটিজুড়ে।
বুল্লি বাই নামের এই অ্যাপটি একটি ওপেন সোর্স অ্যাপ, যা গিটহাব নামের একটি ওয়েব প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অপারেট হত। এই নিয়ে দেশটিতে গত কয়েকমাসে মুসলিম মহিলাদের ‘নিলাম’ বা ‘বিক্রি’র মত অবমাননাকর ঘটনা দ্বিতীয়বার ঘটল। ‘বুল্লি বাই’ অ্যাপটিতে ১০০ জনেরও বেশি মহিলাকে নিশানা করা হয়েছে। এই অ্যাপ খুললে মুসলিম মহিলাদের ছবি দেখা যাবে, টুইটার থেকে নেওয়া ছবি এখানে ব্যবহার করা হচ্ছে।
গত বছরের জুলাই মাসে সামনে এসেছিল একই ধরনেই এক অ্যাপ, ‘সুল্লি ডিলস’। সেই সময় এই অ্যাপে ৮০ জনের বেশি মুসলিম নারীর প্রোফাইল বানানো হয়েছিল।
‘বুল্লি’ বা ‘সুল্লি’ দুটোই স্থানীয় ভাষায় অবমাননাকর ‘স্ল্যাং’। এই দুই অ্যাপের কোনও ক্ষেত্রেই প্রকৃত বিক্রি বা টাকা লেনদেনের সঙ্গে সম্পর্ক নেই। এই অ্যাপ প্রস্তুতকারকদের উদ্দেশ ছিল মুসলিম মহিলাদের অবমাননা করা। একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে এই অ্যাপ বন্ধ করে দিয়েছে গিটহাব। অন্যদিকে, পুলিশও তদন্ত চালাচ্ছে ঘটনার। বারবার এইরকম একই ঘটনা ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে স্বভাবতই।
এই নিন্দাজনক কাজের নিশানায় ছিলেন যেমন বহু নামকরা প্রতিষ্ঠিত মহিলারা, তেমনই ছিলেন সাধারণ মহিলারাও। সাংবাদিক থেকে অভিনেত্রী এমন বহু মানুষকেই নিশানা করে এই অ্যাপের মাধ্যমে নিলামে তোলা হয়।
যাদের ছবি আপলোড করা হয়েছে অ্যাপে তাদের অনেকেই টুইট করেছেন যে তারা বিষয়টিতে আহত ও আতংকিত। অবিলম্বে এ ঘটনায় জড়িত মানুষদের কঠোর শাস্তি দেওয়ারও আর্জি জানানো হয়েছে।
রাজনৈতিক মহলেও বিষয়টি সাড়া ফেলেছে। দেশের বহু মানুষ ঘটনার নিন্দা করে টুইট করছেন। রাহুল গান্ধী, মেহবুব মুফতি, প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদীর মত রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা টুইট করে বিষয়টি কেন্দ্রের নজরে আনার চেষ্টা করেছেন। এমনকি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব শনিবার জানিয়েছিলেন যে ওই অ্যাপটিতে যারা আপলোড করেছে গিটহাব তাদের ব্লক করেছে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পুলিশ সাইবার সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করছে।
আইএসএইচ