ভারতে ১২ হাজার এনজিওর বিদেশি অনুদানের লাইসেন্স বাতিল
মাদার তেরেসার প্রতিষ্ঠিত সংস্থা মিশনারিজ অব চ্যারিটির বিদেশি টাকা অনুদান নেওয়ার লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ হয়নি। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর পর তা বন্ধ হয়ে যাবে বলে আগেই জানিয়েছিল ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। এবার একই ভাবে দেশটিতে ১২ হাজারের বেশি বেসরকারি সংস্থার ফরেইন কনট্রিবিউশন অ্যাক্ট (এফসিআরএ) রেজিস্ট্রেশন বাতিল হয়েছে। এসব সংস্থার মধ্যে অক্সফাম ইন্ডিয়া ট্রাস্ট, ইন্ডিয়ান ইউথ সেন্টার্স ট্রাস্ট, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া, টিউবারকিউলোসিস অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়াও রয়েছে।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সময়ে যে সব সংস্থার এফসিআরএ রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, তাদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশি অনুদান নেওয়ার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল। সেটা শেষ হতেই বদলে গেছে দেশটিতে বিদেশি অনুদান নিতে সক্ষম এমন সংস্থার সংখ্যা। তবে বেশ কিছু সংস্থার লাইসেন্সের মেয়াদ ২০২২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে একদিনের জন্যও লাইসেন্সের মেয়াদ বাড়েনি ৫ হাজার ৯৩৩টি সংস্থার। শুক্রবারও এই তালিকায় থাকা সংস্থার সংখ্যা ছিল ২২ হাজার ৭৬২টি। সেটাই কমে শনিবার হয়েছে ১২ হাজারের বেশি
কোনও সংস্থাকে বিদেশি অনুদান নিতে হলে ভারতের কিছু নিয়ম মানতে হয়। প্রথমত দিল্লির একটি নির্দিষ্ট স্টেট ব্যাঙ্কের শাখায় অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইনে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়। নির্দিষ্ট সময় অন্তর সেই ছাড়পত্র পুনর্নবীকরণও করাতে হয়।
আনন্দবাজার বলছে, এখন পর্যন্ত মাত্র সাড়ে ছয় হাজার সংস্থার আর্জি খতিয়ে দেখা হয়েছে। তাই সব এনজিওর ছাড়পত্রের মেয়াদ ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু মিশনারিজ অব চ্যারিটি, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার মতো সংস্থা এই সুবিধা পাবে না। কারণ তাদের আবেদন খারিজ হয়েছে। ফলে এসব সংস্থা বিদেশি অনুদানের জন্য নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আর কোনও অর্থ নিতে পারবে না। সেই অর্থ খরচও করতে পারবে না।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের এমন পদক্ষেপে বিরোধীদের অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদি সরকার তথা বিজেপি আসলে সংখ্যালঘুদের নিশানা করতে চাইছে। পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুরুতেই এটি নিয়ে সরব হন। বুধবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বিদেশি সংবাদমাধ্যমে ভারতে খ্রিস্টানদের ওপর ‘হামলার’ খবর তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের অনেকেই বালুতে মুখ গুঁজে থাকলেও গোটা বিশ্ব দেখছে। এর বিরুদ্ধে মুখ খোলার ডাক দিয়ে রাহুলের মন্তব্য, অন্যায়ের সময় মুখ বুজে থাকাও সমান অপরাধ।
প্রসঙ্গত কলকাতার মিশনারিজ অব চ্যারিটি ২০২০-২১ আর্থিক বছরের লেনদেনের হিসেব পেশ করেছিল। তাতে বলা হয়েছে, সংগঠন ৩৪৭ জন ব্যক্তি ও ৫৯টি সংস্থার থেকে মোট ৭৫ কোটি টাকা বিদেশি অনুদান পেয়েছিল। সবচেয়ে বেশি অনুদান আসে আমেরিকা ও ব্রিটেন থেকে। আগের বছরের বিদেশি অনুদান বাবদ সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টে ২৭ দশমিক ৩ কোটি টাকা ছিল।
এসএস