শান্তির নোবেলের জন্য ডব্লিউএইচও-গ্রেটা-অ্যালেক্সি নাভালনি মনোনীত
• চলতি বছরের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা শুরু হবে অক্টোবরে
• সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও মনোনীত হয়েছেন
• নরওয়ের একজন সাংসদ শান্তিতে বেশ কয়েকজনের নাম প্রস্তাব করেছেন
• ২০১৪ সাল থেকে প্রত্যেক বছরই তার মনোনীত প্রার্থীরা শান্তির নোবেল পেয়েছেন
• গত বছর জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি শান্তির নোবেল পায়
রাশিয়ার দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের নেতা অ্যালেক্সি নাভালনি, জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং সুইডিশ পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থানবার্গ চলতি বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছেন। নরওয়ের একজন আইনপ্রণেতা চলতি বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য তাদের নাম মনোনীত করেছেন। অতীতে নরওয়ের এই আইনপ্রণেতার মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে থেকে অনেকের নোবেল জয়ের রেকর্ড রয়েছে।
প্রত্যেক বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, সাবেক নোবেলজয়ী এবং বিশিষ্ট শিক্ষাবিদসহ লাখ লাখ মানুষ ভিন্ন ভিন্ন নোবেল পুরস্কারের জন্য পছন্দের প্রার্থীদের মনোনীত করেন। চলতি বছরের নোবেল পুরস্কারের মনোনয়নের সময় রোববার শেষ হচ্ছে। তবে মনোনীত হওয়া মানেই নোবেল কমিটির অনুমোদন আছে বিষয়টি তেমন নয়।
পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট অসলোর পরিচালক হেনরিক উর্ডাল বলেন, নরওয়ের আইনপ্রণেতারা ২০১৪ সাল থেকে যাদের মনোনয়ন দিয়েছেন; তাদের মধ্যে থেকেই প্রায় প্রত্যেক বছরই শান্তি পুরস্কায় জয়ী পাওয়া গেছে। তবে এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ২০১৯ সাল ব্যতিক্রম ছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের মনোনয়ন দেয়ার ধরনটি বেশ ঈর্ষান্বিত হওয়ার মতো।
তবে শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত বিজয়ী কারা হবেন সেবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন নরওয়ের নোবেল কমিটি; এই মনোনয়নের ব্যাপারে তারা কোনও ধরনের মন্তব্য করেন না। গত ৫০ বছরে যারা মনোনীত হয়েছেন এবং হতে পারেননি তাদের নাম গোপন রাখে এই কমিটি।
মনোনীতদের মধ্যে থেকে চূড়ান্ত বিজয়ী বেছে নিতে পারে নোবেল কমিটি। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের জরিপ বলছে, নরওয়ের আইনপ্রণেতারা চলতি বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য যাদের নাম মনোনয়ন দিয়েছেন; তাদের মধ্যে পরিবেশ আন্দোলনকমী গ্রেটা থানবার্গ, রাশিয়ার বিরোধীনেতা অ্যালেক্সি নাভালনি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং সংস্থাটির দরিদ্র দেশগুলোতে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের সুষম বণ্টনের লক্ষ্যে গঠিত উদ্যোগ ‘কোভ্যাক্স’ রয়েছে।
জলবায়ু সঙ্কট মোকাবিলার লড়াইয়ে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরে পরিণত হওয়া কিশোরী গ্রেটা থানবার্গ পরিবেশ আন্দোলনের জন্য গড়ে তুলেছেন ‘ফ্রাইডেজ ফর ফিউচার’ নামের একটি সংগঠন। এই সংগঠনের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্ব নেতাদের সতর্ক করার পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন করছেন তিনি।
অন্যদিকে, রাশিয়ার শিক্ষাবিদ ও দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের কর্মী অ্যালেক্সি নাভালনি দেশটিতে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক কাঠামো প্রতিষ্ঠায় কাজ করছেন। রাশিয়ার বিরোধী এই নেতাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছেন নরওয়ের সাবেক মন্ত্রী ওলা এলভেসতুয়েন।
চলতি বছরে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম আগামী অক্টোবরে ঘোষণা করা হবে। গত বছর জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি শান্তির নোবেল পায়।
করোনাভাইরাস মহামারির বিরুদ্ধে সামনে থেকে লড়াই চালিয়ে আসা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাভি ভ্যাকসিন জোটও মনোনীতদের মধ্যে রয়েছে। দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধ আন্দোলনের ডাক দেয়া বেলারুশের রাজনীতিবিদ সেভেৎলানা টিখানোভস্কায়া নেতৃত্বাধীন দেশটির তিন বিরোধীনেতার নামও রয়েছে এই তালিকায়।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ গোপন মার্কিন নথি ফাঁস করে বিশ্বজুড়ে সাড়া জাগানো ও বিতর্কিত ওয়েবসাইট উইলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এবং তথ্যের অবাধপ্রবাহ নিশ্চিতে কাজ করে আসা যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম অধিকারবিষয়ক সংস্থা কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট, ফ্রান্সের রম্যসাময়িকী শার্লি হেবদোর সাংবাদিক জৈনব এল রাজৌ, হংকংয়ের সংবাদবিষয়ক ওয়েবসাইট হংকং ফ্রি প্রেস এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাক্ট-চেকিং নেটওয়ার্ক ও প্যারিসভিত্তিক রিপোর্টাস উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) নোবেল শান্তি মনোনীতদের তালিকায় রয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স, এএফপি।
এসএস