টানা তিন দিন ধরে সর্বোচ্চ সংক্রমণের রেকর্ড যুক্তরাজ্যে
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাজ্যে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা। তবে গত বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে প্রতিদিন যত সংখ্যক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, দেশটির গত দুই বছরের মহামারির ইতিহাসে এত বেশি দৈনিক সংক্রমণের ঘটনা কখনও ঘটেনি।
শনিবার দেশটির সরকারি তথ্যের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্যে করোনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৭৮ হাজার ১৫৮ জন। তার পরের দিন, বৃহস্পতিবার এই সংখ্যা বেড়ে পৌঁছায় ৮৮ হাজার ১৯৫ জনে।
কিন্তু এই দুইদিনের নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাকে ছাপিয়ে গেছে শুক্রবারের রেকর্ড। এই দিন দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৯৩ হাজার ৪৫ জন।
নতুন শনাক্ত হওয়া এই করোনা রোগীদের একটি বিশাল অংশ ওমিক্রনে আক্রান্ত।গত ২৪ নভেম্বর বিশ্ববাসীকে প্রথম করোনাভাইরাসে রূপান্তরিত ধরন ওমিক্রনের তথ্য দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
অবশ্য এক গবেষণায় জানা গেছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় এই ধরনটির ব্যাপারে বিশ্বকে জানানোর ৫ দিন আগে, নেদারল্যান্ডসে এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ৬৩টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে সার্স-কোভ-২ বা করোনাভাইরাসের রূপান্তরিত ধরন ওমিক্রন।
যুক্তরাজ্যে প্রথম ওমক্রিনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় ২৭ নভেম্বর। দেশটিতে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ১৩ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪৭ জন।
গত ১৩ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ জানান, সক্রিয় এই করোনা রোগীদের অর্ধেকই ওমিক্রনে আক্রান্ত।
আক্রান্তদের মধ্যে ১০ জন ইতোমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে সম্প্রতি একজনের মৃত্যুও হয়েছে।
দেশবাসীকে সতর্কবার্তা দিয়ে যুক্তরাজ্যের স্কটল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নিকোলা স্টারজিওন বলেন, ‘ওমিক্রন এখন দেশের প্রাধান্যবিস্তারকারী ধরন। এক সপ্তাহ আগে আমি যে সুনামির শঙ্কা করেছিলাম, তা ইতোমধ্যে আমাদের আঘাত করেছে।’
ওয়েলসের নেতা মার্ক ড্রেকফোর্ড ইতোমধ্যে সেখানকার সকল নৈশক্লাব আগামী ২৬ ডিসেম্বরের পর থেকে বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। পাশাপাশি নির্দেশ, দোকান ও জনসমাগমপূর্ণ স্থানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সবার জন্য বাধ্যতামূলক।
যুক্তরাজ্য সরকার বর্তমানে নাগরিকদের বুস্টার বা তৃতীয় ডোজ টিকা দেওয়ার কাজে ব্যাপক ব্যস্ত সময় পার করছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এসম্পর্কে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য কেবল ইউরোপের সফল ও দ্রুততম টিকাদানকারী দেশ হওয়া নয়, বরং ওমিক্রনের কারণে যে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, তাকে যতটুকু সম্ভব নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা।’
এসএমডব্লিউ