এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনা থেকে হঠাৎ সরে দাঁড়াল আমিরাত
যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়ে দেশটির সঙ্গে আলোচনা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। বিষয়টি ইতোমধ্যেই ওয়াশিংটনকে জানিয়ে দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটি। ইউএই’র কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
২ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারের বিশাল সামরিক চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পাওয়ার কথা ছিল আরব আমিরাতের। এ লক্ষ্যে দেশটির মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গেও আলোচনা চালিয়ে আসছিল।
চুক্তির আওতায় এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের পাশাপাশি ড্রোনসহ সর্বাধুনিক প্রযুক্তির অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামও হাতে আসার কথা ছিল দেশটির। মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সেই আলোচনাই স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় ইউএই।
রয়টার্স বলছে, আবুধাবির সঙ্গে চীনের সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে ওয়াশিংটনের। আর এতে করেই লকহিড মার্টিনের তৈরি ৫০টি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রির আলোচনায় ধীরগতির সৃষ্টি হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা, এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানগুলো আমিরাতের হাতে গেলে সেগুলো চীনের গুপ্তচরবৃত্তির শিকার হতে পারে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ফাইভ-জি প্রযুক্তির সেবা প্রদান করছে চীনা টেলিকম জায়ান্ট হুয়াওয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের কারণগুলোর মধ্যে এটিও একটি। কারণ ওয়াশিংটনের ধারণা হুয়াওয়ের মাধ্যমে অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের গোপন তথ্য চীনা কর্তৃপক্ষের হাতে চলে যেতে পারে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়াদের শেষ দিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে এই চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। চুক্তির আওতায় ওয়াশিংটনের কাছ থেকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, রিপার ড্রোন এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম পাওয়ার কথা আমিরাতের। কিন্তু মঙ্গলবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ইউএই’র একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানায়, ‘এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পাওয়ার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা স্থগিত করবে আবুধাবি।’
এদিকে রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের এক কর্মকর্তা বলেছেন, টেকনিক্যাল রিকোয়ারমেন্টস, স্বাধীনভাবে যুদ্ধবিমান পরিচালনার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা এবং লাভ-ক্ষতির বিষয়টি বিশ্লেষণ করে আবুধাবি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে।
অবশ্য চীনের সঙ্গে আবুধাবির অংশীদারিত্ব দিন দিন বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। আর আরব আমিরাতের সর্বশেষ এই সিদ্ধান্ত দীর্ঘদিনের মিত্র আবুধাবি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বড় রকমের ঝাঁকুনি বলেও উল্লেখ করেছে সংবাদমাধ্যমটি।
টিএম