পুতিনকে আবারও কড়া হুঁশিয়ারি বাইডেনের
ইউক্রেনে হামলার আশঙ্কার মধ্যে রাশিয়াকে উদ্দেশ করে আবারও কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, ওয়াশিংটনের মিত্র ওই দেশটিতে হামলা করলে রাশিয়াকে কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হওয়াসহ চড়া মূল্য দিতে হবে বলে রুশ প্রেসিডেন্টকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সময় শনিবার (১১ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের সামনে বাইডেন একথা বলেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। এর আগে গত মঙ্গলবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল বৈঠকেও ইউক্রেনে হামলার আশঙ্কা নিয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন ডেমোক্র্যাটিক এই প্রেসিডেন্ট।
গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত সেই বৈঠকের প্রসঙ্গে শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জো বাইডেন বলেন, ‘আমি এটি পুতিনের কাছে পরিষ্কার করে দিয়েছিলাম, যে রাশিয়া যদি ইউক্রেনের দিকে আক্রমণাত্মক ভাবে এগিয়ে যায় তাহলে তাদের অর্থনৈতিক পরিণতি ভয়ংকর ধ্বংসাত্মক হতে চলেছে।’
বেশ কয়েক মাস ধরেই ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশপন্থি বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে। এবার কি সেখানে মার্কিন সেনা পাঠানো হবে? এ প্রসঙ্গে বাইডেন বলেন, তেমন কোনো পরিকল্পনা তাদের কখনোই ছিল না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোকে তাদের প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করার জন্য পূর্ব ইউরোপের ন্যাটো দেশগুলোতে সেনা পাঠানোর প্রয়োজন হতে পারে।
ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে ক্রমেই উত্তেজনা বাড়ছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের সাবেক এই দেশটির পূর্বাঞ্চলে গণহত্যার অভিযোগ তুলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। অন্যদিকে, রুশ হামলা ঠেকাতে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ইতোমধ্য়েই ফোনে কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
একইসঙ্গে সামরিক জোট ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত ইউরোপের দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এসব ফোনালাপে বাইডেন স্পষ্ট জানিয়েছেন, বিদেশি আগ্রাসন হলে কিয়েভের পাশে দাঁড়াবে ওয়াশিংটন। ভার্চ্যুয়াল বৈঠকের পর এক সপ্তাহ না পার হলেও ফের সরাসরি পুতিনকে হুঁশিয়ারিও দিলেন বাইডেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ইউক্রেনের মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স তথা সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের কিরইয়োল বুদানভ জানান, ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় ৯২ হাজার সেনা মোতায়েন রেখেছে রাশিয়া।
মার্কিন পত্রিকা ‘মিলিটারি টাইমস’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বুদানভ দাবি করেন, আগামী জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে মস্কো। শুরুতে রুশ যুদ্ধবিমান ও গোলন্দাজ বাহিনী ইউক্রেনের সামরিক পোস্টগুলোতে হামলা চালাবে। তারপর আসবে রুশ স্থল বাহিনী।
তবে বরাবরই এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়া। গত সপ্তাহে বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করবে না। এসময় ইউক্রেনের বিরুদ্ধে প্ররোচনা ও উসকানিরও অভিযোগ আনেন তিনি।
একইসঙ্গে পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর বিস্তার না করা এবং রাশিয়ার আশেপাশে বিধ্বংসী অস্ত্রের মোতায়েন না করার বিষয়েও বৈঠকে দাবি করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
টিএম