একই চিতায় পাশাপাশি বিপিন-মধুলিকা, চিরবিদায় জানালেন ভারতবাসী
চোখের জলে ভারতের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল বিপিন রাওয়াতকে শেষ বিদায় জানাল ভারত। একই চিতায় পাশাপাশি শোয়ানো হল জেনারেল বিপিন ও তাঁর স্ত্রী মধুলিকাকে। ১৭ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে জানানো হল শেষ শ্রদ্ধা।
বুধবার তামিলনাড়ুতে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় সস্ত্রীক জেনারেল রাওয়াতসহ ১৩ জনের। বৃহস্পতিবারই সেখান থেকে জেনারেল রাওয়াত ও তার স্ত্রীর মৃতদেহ দিল্লিতে পৌঁছায়। শুক্রবার বিকেল ৪ টায় ১৭ তোপধ্বনির মধ্যে দিয়ে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় করা হয় তাদের শেষকৃত্য।
দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে জেনারেলকে শেষ শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি;প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। ভারতের প্রথম সিডিএসকে তার কামরাজ মার্গের বাসভবনে গিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামি, কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী থেকে অসংখ্য সাধারণ মানুষ। শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদরাও।
শুক্রবার বেলা ৩ টার দিকে দিল্লি ফুল ও জাতীয় পতাকায় সজ্জিত সামরিক গাড়িতে দিল্লি সেনানিবাসে নিয়ে যাওয়া হয় বিপিন রাওয়াত, তার স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াতসহ মৃত ১১ সামরিক কর্মকর্তাকে। ভারতীয় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন এই শবযাত্রায়।
বিপিন রাওয়াত-মধুলিকা রাওয়াতের দুই মেয়ে কৃতিকা ও তারিনি শেষকৃত্যানুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পিতামাতার সৎকার কাজ করেন দুই কন্যা।
এছাড়া এ সময় দিল্লি ক্যান্টনমেন্টে শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত ছিলেন শ্রীলঙ্কা, ভুটান, নেপাল ও বাংলাদেশের সেনা কমান্ডাররা। এছাড়া শোকবার্তা পাঠানো হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, ফ্রান্স, জাপান, ইসরায়েলসহ আরও অনেক দেশের সেনা বাহিনীর পক্ষ থেকে।
বিকাল ৩ টার দিকে সেনানিবাসে রওনা হওয়ার আগে দিল্লির কামরাজ মার্গে জেনারেলের বাসভবনে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয়েছিল বিপিন রাওয়াত ও মধুলিকা রাওয়াতের মরদেহ। রাজনীতিবিদদের অনেকেই তার বাসভবনে গিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন।
বুধবার (০৮ ডিসেম্বর) দুপুর ২ টার দিকে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর কুনুর এলাকার গভীর জঙ্গলে বিধ্বস্ত হয় সামরিক চপার হেলিকপ্টার এমআই-১৭ ভি ৫। ভারতের সেনাবাহিনীর প্রথম চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত, তার স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত ও ১২ জন সেনা কর্মকর্তা ছিলেন সেই হেলিকপ্টারে।
বুধবার বেলা ১১ টা ৪৫ মিনিটে তামিলনাড়ুর কোইম্বাটোর জেলার সুলুর শহরে ভারতের বিমান বাহিনীর ঘাঁটি থেকে থেকে রাজ্যের নীলগিরি পার্বত্য এলাকার ওয়েলিংটন শহরের দিকে যাচ্ছিল হেলিকপ্টারটি। ওয়েলিংটনে ভারতের সেনাবাহিনীর ডিফেন্স সার্ভিস স্টাফ কলেজের প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন ৬৩ বছর বয়সী রাওয়াত।
তার মৃত্যুর পর নিজের ফেসবুক পেজে এক শোকবার্তায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লেখেন, ‘আমরা একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক ও অসাধারণ সৈনিককে হারিয়েছি।’
সূত্র: আনন্দবাজার, এনডিটিভি
এসএমডব্লিউ