বিপিন রাওয়াতের জন্য অপেক্ষায় ছিল ফেলে আসা গ্রাম
ভারতের প্রথম প্রতিরক্ষাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত সস্ত্রীক প্রাণ হারিয়েছেন। বুধবার দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর কুন্নুরের জঙ্গলে হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে, আগুনে পুড়ে তার সঙ্গে অঙ্গার হয়েছেন স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াতসহ অন্য ১১ আরোহী।
উত্তরাখণ্ড রাজ্যের রাজধানী শহর দেরাদুনের সাহসী বালক বিপিন রাওয়াত। তিনিই একদিন হয়ে উঠেন ভারতের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ। তার ফেলে আসা সেই ছোটবেলার গ্রাম আজও পথ চেয়ে আছে, কবে ফিরবেন বিপিন রাওয়াত? সেই শৈশবের উত্তরাখণ্ডের পাহাড় ঘেরা সায়না গ্রাম অপেক্ষা করছিল বিপিন রাওয়াতের জন্য।
তার চাচা ভরত সিং রাওয়াত ফোনে জানান, আমি কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছি না কি করে এ ঘটনা হলো? আমি প্রার্থনা করছিলাম সে ও তার স্ত্রী যেন আরোগ্য লাভ করে। বিপিন রাওয়াত এ গ্রামেই বাকি জীবনটা কাটানোর কথা ভাবত। এমনকি বাড়ি করার জন্য একটি জমিও দেখেছিল।
ভরত সিং রাওয়াতও সেনাবাহিনীতে হাবিলদার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি বলেন, দেশের বাড়ির প্রতি খুব আকর্ষণ ছিল তার। শেকড়কে কোনো দিন ভোলেননি তিনি। বিপিন রাওয়াতের চাচা বলেন, ২০১৮ সালে গ্রামে এসে বলেছিল এখানে একটা বাড়ি তৈরি করতে চায়। আমি বলেছিলাম আমাদের অনেক জমি আছে। কোন জায়গায় বাড়ি তৈরি করতে চাইছে সেটা যেন বলে। সে এভাবে কি করে সব ছেড়ে চলে যেতে পারে। সে তো আবার গ্রামে থাকতে চেয়েছিল।
চাচা ভরত সিং রাওয়াত আরও বলেন, মাসখানেক আগেও ফোন করল। বলল গ্রামে যাওয়ার রাস্তাটি এখনও ওরকমই আছে? আসলে কাছের পাকা রাস্তা থেকে এখনও এক কিলোমিটার হেঁটে তারপর গ্রামে পৌঁছাতে হয়।
ভরত সিংয়ের ছেলে রবীন্দ্র সিং বলেন, একেবারে ঘরের মানুষ চলে গেলেন। তার সাফল্যে আমরা গর্বিত ছিলাম। তিনি দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ ছিলেন। তিনি আমাদের অনুপ্রেরণা ছিলেন। এখানকার যুবকরা তাকে দেখেই আর্মিতে যাওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত হতেন। সেই বীর যোদ্ধাই চলে গেলেন।
গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মানসী দেবী বলেন, এভাবে চলে যাবেন বুঝতে পারিনি।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি বলেন, উত্তরাখণ্ডের বড় ক্ষতি হয়ে গেল। এ মাটির সন্তান হিসেবে গর্ব বোধ করি।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
এসএসএইচ