চীনের দৌড়ে লাগাম টেনেছে করোনা, বাড়ছে যুদ্ধের ঝুঁকি
করোনাভাইরাস মহামারি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের শক্তি দুর্বল করে দিয়েছে এবং এই অঞ্চলের গভীরতর নিরাপত্তা অনিশ্চয়তা একটি যুদ্ধের ঝুঁকিকে ‘উল্লেখযোগ্যভাবে’ বৃদ্ধি করেছে। রোববার অস্ট্রেলিয়ার থিঙ্কট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান লোয়ি ইনস্টিটিউট এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
সিডনি-ভিত্তিক পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক থিঙ্কট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান বলেছে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মার্কিন মিত্ররা এবং এই অঞ্চলে ভারতের মতো প্রধান ভারসাম্য রক্ষাকারী শক্তিগুলো চীনের উত্থানের প্রতিক্রিয়ায় কখনই সামরিক ও কৌশলগত পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণে আমেরিকার খেয়াল-খুশির ওপর খুব বেশি নির্ভরশীল নয়।
একই সময়ে বেইজিং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোকে মার্কিন জোটে যোগদান থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেছে। এছাড়া রাশিয়া, পাকিস্তানের পাশাপাশি উত্তর কোরিয়ার সাথে তার সামরিক বিনিময় আরও বাড়িয়েছে। পারমাণবিক অস্ত্রধারী মিত্রদের নিয়ে এই অঞ্চলের শক্তিশালী ত্রয়ী হিসাবে হাজির হয়েছে চীন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদীয়মান সামরিক শক্তির ভারসাম্য ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রতিরোধ এবং কৌশলগত স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ব্যাঘাত সৃষ্টি করে কি-না সেটি এখন উন্মুক্ত প্রশ্ন।
এছাড়া বৈরী সম্পর্কের গভীরতা, মার্কিন-চীন প্রতিযোগিতা এবং একাধিক সম্ভাব্য বিবাদপূর্ণ বিষয়ের উপস্থিতির অর্থ হচ্ছে সেখানে যুদ্ধের উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি বাড়ছে। মহামারির প্রভাব মোটাদাগে এই অঞ্চলের সমৃদ্ধি হ্রাস এবং চীনের বিস্তৃত শক্তিকে দুর্বল করে দিয়েছে।
লোয়ি ইনস্টিটিউট বলছে, চলতি দশকের শেষের দিকে সর্বব্যাপী শক্তির ক্ষেত্রে সমকক্ষ প্রতিযোগীর চেয়ে বেইজিংয়ের এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। এর ফলে বিশ্বে চীনের উত্থানের বিষয়ে অনিবার্য কিছুই ঘটার সম্ভাবনা নেই। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের মতো চীনও প্রভাবশালী হয়ে উঠবে সেটিও অসম্ভব মনে হচ্ছে।
সিডনি-ভিত্তিক এই থিঙ্কট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান বলছে, গত কয়েক বছরে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে চীনের সম্পর্ক তাৎপর্যপূর্ণভাবে খারাপ হয়েছে। একই সঙ্গে বেশিরভাগ মার্কিন অংশীদারের তুলনায় চীনের ক্রমবর্ধমান শক্তিকে ভালোভাবে পরিমাপ করেছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু দেশটি ওয়াশিংটনের ওপর আরও বেশি নির্ভরশীল হয়ে উঠছে।
২০১৮ সালে নিজেদের ৫জি টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক থেকে চীনের প্রযুক্তি জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়েকে নিষিদ্ধ করে অস্ট্রেলিয়া। গত বছর করোনাভাইরাসের উৎস জানতে ক্যানবেরা স্বতন্ত্র তদন্ত কমিশনের অনুসন্ধানের ডাক দেওয়ায় এই সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে। এ ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে বাণিজ্যিক প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বেইজিং।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস