COP26: দরিদ্র দেশগুলোকে ৩৩৫০ কোটি টাকা দেবে যুক্তরাজ্য
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দরিদ্র দেশগুলোকে ২৯ কোটি পাউন্ড দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে যুক্তরাজ্য। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। সোমবার (৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
এদিকে জলবায়ু সংকট থেকে বিশ্বকে বাঁচানোর লড়াইয়ে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয় চলমান জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক কপ-২৬ সম্মেলন দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়িয়েছে। জলবায়ু ইস্যুতে আলোচনার জন্য বিশ্বের প্রায় সবগুলো দেশের মন্ত্রীরা এখন গ্লাসগোতে অবস্থান করছেন।
বিবিসি বলছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে দরিদ্র দেশগুলোকে কিভাবে সহায়তা প্রদান করা যায়; মূলত এই বিষয়টি নিয়েই আলোচনা করবেন নেতারা। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত কি না, এই বিষয়টি নিয়েও তারা আলোচনা করবেন।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দরিদ্র দেশগুলো অবশ্য ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার অর্থনৈতিক সহায়তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। এসব দেশের দাবি- জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিভিন্ন কারণে তারা ইতোমধ্যেই ভুগছেন এবং ভবিষ্যতে তারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের অঙ্গীকারকৃত পুরো অর্থের মধ্যে ২৭৪ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করা হবে এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার ১৬৫ কোটি টাকা। এসব দেশে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার পরিকল্পনা, বিনিয়োগ এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এই অর্থ ব্যয় করা হবে।
এছাড়া নিজেদের প্রয়োজন ও সংকট চিহ্নিত করে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ১৫ মিলিয়ন পাউন্ড দেওয়া হবে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১৭৪ কোটি টাকা। আর বাকি ১ মিলিয়ন পাউন্ড দেওয়া হবে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত মানবিক সহায়তার জন্য।
বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার, রাষ্ট্রপ্রধান ও বিভিন্ন সংস্থার ২৫ হাজারের বেশি সদস্যের অংশগ্রহণে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয় অক্টোবর মাসের শেষের দিকে এই সম্মেলন শুরু হয়। তবে ওই সম্মেলনে অংশ নেননি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
এর আগে এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছিল, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জলবায়ু সম্মেলনে অংশ না নিলেও উভয় দেশই সেখানে প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে। আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করবেন এবং বিভিন্ন আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব এখন স্পষ্ট। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে নিয়মিত ভাবে দাবদাহ, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে। একইসঙ্গে বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাও।
এইভাবে চলতে থাকলে সমুদ্রগর্ভে হারিয়ে যেতে পারে বহু দেশ। একইসঙ্গে বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে কোটি কোটি মানুষ।
টিএম