COP26: ২০৩০ সালের মধ্যে বন উজাড় বন্ধের প্রতিশ্রুতি
২০৩০ সালের মধ্যে বন উজাড় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার বিষয়ে একমত হয়েছেন বিশ্বের শতাধিক দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা। জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক চলমান কপ-২৬ সম্মেলনের প্রথম বৃহৎ কোনো চুক্তি হিসেবে বন উজাড় বন্ধের বিষয়ে একমত হন তারা। মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
দক্ষিণ আমেরিকার বিশাল এলাকাজুড়ে আমাজন বনাঞ্চল বিস্তৃত। এই বনভূমির বিশাল অংশ ব্রাজিলের মধ্যে পড়েছে এবং সেখানে বনের গাছ কেটে উজাড় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে ২০৩০ সালের মধ্যে বন উজাড় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার বিষয়ে মঙ্গলবার যে চুক্তি হতে যাচ্ছে, তাতে ব্রাজিলও স্বাক্ষর করবে।
বিবিসি জানিয়েছে, বন উজাড় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে এবং চুক্তি মোতাবেক বনাঞ্চলের স্বাভাবিক পরিস্থিতি বজায় রাখতে প্রায় ১ হাজার ৯২০ কোটি মার্কিন ডলারের তহবিল গঠন করা হবে। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে বিপুল অংকের এই তহবিল গঠন করা হবে।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, দাবানল নিয়ন্ত্রণ, ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি সংস্কার ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর যথাযথ নিরাপত্তায় ব্যয় করার জন্য এই তহবিলের অর্থ উন্নয়নশীল দেশগুলোও পাবে।
এদিকে বন উজাড় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার ব্যাপারে সর্বশেষ এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু তারা সতর্ক করছেন যে, বনভূমি উজাড়ে ধীরগতি আনার বিষয়ে ২০১৪ সালের একটি চুক্তি কার্যত ব্যর্থ হয়েছে এবং এই কারণে অঙ্গীকার পূরণে বিশ্বনেতাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিবিসি জানিয়েছে, এই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং থাকছেন। এছাড়া ব্রাজিল, কানাডা, রাশিয়া ও ইন্দোনেশিয়াও এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে। পৃথিবীর মোট বনভূমির প্রায় ৮৫ শতাংশই এই চার দেশে রয়েছে।
উল্লেখ্য, বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব এখন স্পষ্ট। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে নিয়মিত ভাবে দাবদাহ, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে। একইসঙ্গে বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাও।
এছাড়া বনের গাছ কেটে ফেললে সেটিও জলবায়ু পরিবর্তনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। কারণ গাছ কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে এবং বিপুল পরিমাণে বন উজাড় হলে বায়ুতে ক্ষতিকর এই গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে যায়।
এই পরিস্থিতিতে ২০৩০ সালের মধ্যে বন উজাড় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার বিষয়ে একটি বৈশ্বিক চুক্তি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
টিএম