অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল সুদান
বেসামরিক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানের হাজার হাজার মানুষ অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ করেছেন। শনিবার দেশটিতে ‘মিলিয়ন অব অক্টোবর ৩০’ নামে ডাক দেওয়া অভ্যুত্থানবিরোধী এই বিক্ষোভ থেকে বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা দেশটির সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বের প্রতি গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা সামরিক কর্তৃপক্ষের ক্ষমতাগ্রহণকে প্রত্যাখ্যান এবং বন্দীদের মুক্তির দাবি করেছেন। স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল সুদান টিভি বলছে, রাজধানী খার্তুমের প্রধান প্রধান সব সড়ক এবং সেতুর বেশিরভাগই বন্ধ করে দিয়েছে সুদানের নিরাপত্তা বাহিনী। তবে রাজধানীর সঙ্গে সংযোগকারী হালফায়া ও সোবা সেতু চালু রয়েছে।
গত সোমবার অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতা দখলে নেওয়ার পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী আব্দাল্লা হামদককে আটক করে দেশটির সেনাবাহিনী। সুদানের সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের এই ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে হাজার হাজার নাগরিক প্রত্যেকদিন বিক্ষোভ করেছেন।
অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারীদের দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১১ জনের প্রাণহানি এবং বেশ কয়েকজন গণতন্ত্রকামীকে আটক করা হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্ব ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা সুদানে অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিনিধি বলেছেন, দেশটির কর্তৃপক্ষ ইন্টারনেট এবং ফোন লাইনের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করলেও প্রতিবাদকারীদের লিফলেট, ক্ষুদে বার্তা, গ্রাফিতি এবং আশপাশের এলাকায় সমাবেশ লোকজনকে বিক্ষোভ-প্রতিবাদে জড়ো হতে উৎসাহিত করেছে।
দেশটির মানবাধিকার কর্মী তাহানি আব্বাস বলেছেন, ‘আমরা সামরিক বাহিনী দ্বারা শাসিত হবে না। আমরা বিক্ষোভ থেকে সেই বার্তাই দেব। সামরিক বাহিনী রক্ত পীপাসু এবং বিবেকহীন। কিন্তু আমরা আর ভয় পাই না।’
রাজধানী সুদানের পাশাপাশি দেশটির বিভিন্ন প্রান্তের হাজার হাজার মানুষ অভ্যুত্থানবিরোধী এই বিক্ষোভে রাস্তায় নেমে এসেছেন। মোহাম্মদ নামের এক মানবাধিকার কর্মী বলেন, সেনাদের ব্যারাকে চলে যাওয়া এবং হামদকের হাতে নেতৃত্ব ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, আমাদের দাবি একটি বেসামরিক দেশের, একটি গণতান্ত্রিক দেশের। অন্য কিছু নয়।
এসএস