তালেবানকে ঠেকাতে জাতিসংঘে আফগান নারীদের আকুতি
আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী তালেবানকে জাতিসংঘে আসন না দেওয়ার আকুতি জানিয়েছেন একদল আফগান নারী। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতর সফরের সময় এই অনুরোধ জানান তারা।
শুক্রবার (২২ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। আফগান ওই নারীদের দাবি, তালেবানের চেয়েও ভালো কাউকে জাতিসংঘে আফগানিস্তানের হয়ে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ দেওয়া হোক।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বাইরে সাবেক আফগান রাজনীতিক ও শান্তি আলোচক ফাওজিয়া কুফি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা খুবই সহজ একটি বিষয়। জাতিসংঘে এমন কাউকেই তাদের এই আসনটি দেওয়া প্রয়োজন যারা আফগানিস্তানে সকলের অধিকারকে সম্মান করবে।’
আফগান এই নারী আরও বলেন, ‘আমরা এই বিষয়ে অনেক কথা বলেছি। কিন্তু আমাদের কথা শোনা হয়নি।’ তার ভাষায়, ‘সহায়তা, অর্থ এবং স্বীকৃতির মতো সুযোগ-সুবিধা তখনই দেওয়া প্রয়োজন, যখন বিশ্ব সেগুলো অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার, নারীর অধিকারসহ সকলের অধিকারের জন্য ব্যবহার করতে পারবে।’
ফাওজিয়া কুফির সঙ্গে এসময় সাবেক রাজনীতিক নাহিদ ফরিদ, কূটনীতিক আসিলা ওয়ারদাক এবং সাংবাদিক আনিসা শহীদ উপস্থিত ছিলেন।
নাহিদ ফরিদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করার পর নারীদের কর্মক্ষেত্রে ফেরার এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু তারা তাদের সেই প্রতিশ্রুতি রাখেনি।’
এদিকে আফগানিস্তানে নারীদের একটি বিক্ষোভ মিছিলের খবর প্রকাশের ‘অপরাধে’ সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে তালেবান সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী। বৃহস্পতিবার দেশটির রাজধানী কাবুলে এই ঘটনা ঘটে।
বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে কাবুলে আফগান সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে নারীদের একটি বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। প্রায় ২০ জন নারী হাতে লেখা প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল নিয়ে মন্ত্রণালয়ের ফটকের কাছে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেন।
এএফপি বলছে, নারীদের সমাবেশের ঘটনা কাভার করতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা কয়েকজন সংবাদিককে আঘাত করে তালেবান যোদ্ধারা, তবে কারোর আঘাতই গুরুতর নয়। সাংবাদিকদের ওপর হামলার পর স্বাভাবিকভাবেই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় নারীদের প্রতিবাদ সমাবেশ।
উল্লেখ্য, গত ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুল দখলের মধ্যে দিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলে নেয় তালেবান। ক্ষমতা দখলের পরপরই কো এডুকেশন ও মেয়েদের মাধ্যমিক স্কুলগুলো বন্ধ করে দেয় তারা। প্রায় আড়াই মাস ধরে এই স্কুলগুলো বন্ধ থাকায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছে দেশটির নারী শিক্ষা ব্যবস্থা।
টিএম