কাশ্মিরে গুলিতে নিহত বেড়ে ১১
সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের জেরে অস্থিতিশীল হয়ে ওঠা ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গুলিতে আরও দুই বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানি ঘটেছে। রোববার কাশ্মিরের কুলগাঁও জেলায় গুলিতে নিহত ওই দুই বেসামরিক বিহারের বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ নিয়ে চলতি মাসে ভারত শাসিত জম্মু-কাশ্মিরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গুলিতে অন্তত ১১ বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানি ঘটেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, রোববার কাশ্মিরের কুলগাঁও জেলার ভ্যানপোহ এলাকায় দিনমজুরদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। এতে দু’জন নিহত ও আরও একজন আহত হয়েছেন।
একদিন আগে এই উপত্যকায় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গুলিতে বিহারের একজন পানিপুরি বিক্রেতা এবং উত্তরপ্রদেশের এক রং মিস্ত্রি নিহত হন। পুলিশ বলছে, শ্রীনগরের রাস্তায় পানিপুরি বিক্রেতা অরবিন্দ কুমার শাহকে বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। পুলওয়ামায় গুলিতে রং মিস্ত্রি সগীর আহমদ নিহত হন।
স্থানীয় একজন কর্মকর্তা বলেন, বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের চালানো হামলায় এখন পর্যন্ত যে ১১ জন নিহত হয়েছেন; তাদের মধ্যে পাঁচজন অন্য রাজ্যের বাসিন্দা। এটি ইঙ্গিত দিচ্ছে, বিচ্ছিন্নতাবাদীরা কাশ্মির থেকে অন্য রাজ্যের বাসিন্দাদের তাড়িয়ে দিতে চায়।
নিহতদের মধ্যে কাশ্মিরি পন্ডিত সম্প্রদায়ের বিখ্যাত সদস্য মাখন লাল বিন্দ্রু-সহ শ্রীনগরের ওষুধ বিক্রেতা মোহাম্মদ শফি লোন, ট্যাক্সি চালক দ্বীপক চাঁদ, শিক্ষক সুপুন্দর কৌর ও রাস্তায় খাবার বিক্রেতা বীরেন্দ্রর পাসওয়ান রয়েছেন।
এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উপত্যকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। যে কারণে কাশ্মিরি পন্ডিতদের পরিবারের সদস্যরা অস্থায়ী আশ্রয় শিবির ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। কাশ্মিরি অভিবাসীদের জন্য দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চালুকৃত বিশেষ প্রকল্পের আওতায় চাকরি পাওয়ার পর উপত্যকায় ফিরে আসা সরকারি কর্মচারী-সহ কয়েক ডজন পরিবার ইতোমধ্যে অন্যত্র চলে গেছে।
হামলা বৃদ্ধি পাওয়ায় জম্মু এবং কাশ্মিরে ব্যাপক সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ইতোমধ্যে এই উপত্যকা থেকে প্রায় ৯০০ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।
পুলিশের পাশাপাশি দেশটির সামরিক বাহিনীও সন্ত্রাসবিরোধী চিরুনি অভিযান জোরদার করেছে। গত এক সপ্তাহে জম্মু-কাশ্মিরে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে অন্তত ১৩ জন বিচ্ছিন্নতাবাদী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
‘বেসামরিক হত্যাকাণ্ডের পর ৯টি বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ১৩ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। আমরা গত ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে শ্রীনগরে তিন সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছি,’ বলেছেন জম্মু-কাশ্মির পুলিশের মহাপরিদর্শক বিজয় কুমার।
এর আগে, শনিবার ভারতীয় সামরিক বাহিনী জানায়, জম্মু-কাশ্মিরের পুঞ্চ জেলায় ৪৮ ঘণ্টার সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে সেনাবাহিনীর অন্তত ৯ সদস্যের প্রাণহানি ঘটেছে।
সূত্র: এনডিটিভি।
এসএস