দোহায় তালেবান-মার্কিন বৈঠক, সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের প্রত্যাশা
‘সম্পর্কের নতুন অধ্যায়’ সূচনার লক্ষ্যে কাতারের রাজধানী দোহায় যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে করেছে আফগানিস্তানের নতুন শাসকগোষ্ঠী তালেবান। তালেবানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের মধ্যে শনিবার দোহায় এই বৈঠক হয়েছে বলে আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোল্লা আমির খান মুত্তাকি জানিয়েছেন।
২০ বছরের আফগান যুদ্ধের অবসানের পর গত আগস্টে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার এবং তালেবানের ক্ষমতায় পুনরুত্থানের পর শনিবার প্রথমবারের মতো দোহায় মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে তালেবানের দু’দিনের বৈঠক শুরু হয়েছে।
আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, মানবিক সহায়তার পাশাপাশি গত বছর ওয়াশিংটনের সাথে তালেবানের স্বাক্ষরিত চুক্তির বাস্তবায়ন ছিল আফগান প্রতিনিধিদলের আলোচনার মূল বিষয়। গত বছরের ওই চুক্তির পর মার্কিন সৈন্য চূড়ান্ত প্রত্যাহারের পথ তৈরি হয়।
তিনি বলেন, আফগান প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্রকে আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে। আফগানিস্তানের জনগণকে যুক্তরাষ্ট্র করোনাভাইরাসের টিকা দেবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
পরবর্তীতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তালেবানের প্রতিনিধিদের বৈঠকের কথা রয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের একজন মুখপাত্র বলেছেন, আফগানিস্তানের শাসকগোষ্ঠী হিসাবে তালেবানকে স্বীকৃতি বা বৈধতা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে বাস্তববাদী আলোচনার ধারাবাহিকতায় ওই আলোচনা হয়েছে।
আফগান এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আফগান, মার্কিন নাগরিক এবং অন্যান্য বিদেশি নাগরিকদের আফগানিস্তান থেকে নিরাপদে চলে যাওয়ার বিষয়টিই বৈঠকে অগ্রাধিকার পেয়েছে। এছাড়া নারী ও মেয়েসহ সকল আফগানদের অধিকারের প্রতি সম্মান এবং ব্যাপক সমর্থনযুক্ত একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের আহ্বান ছিল ওই বৈঠকের আরেকটি লক্ষ্য।
তালেবানের সঙ্গে এই বৈঠকে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কারা কাতারের রাজধানী দোহা সফর করেছেন; সেবিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর কোনও তথ্য প্রকাশ করেনি।
তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসার পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) অনুসারি ইসলামিক স্টেট ইন খোরাসান প্রদেশ, আইএসকেপি (আইএসআইএস-কে) তালেবানের পাশাপাশি জাতিগত এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা বৃদ্ধি করেছে।
শুক্রবারও আইএসকেপির এক আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী মসজিদে হামলা চালিয়ে ৪৬ সংখ্যালঘু শিয়া মুসলিমকে হত্যা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান ত্যাগের পর আইএসকেপির প্রাণঘাতী এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
সূত্র: আলজাজিরা।
এসএস