তাইওয়ানের পতন বিপর্যয়কর পরিণতি ডেকে আনবে, প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারি
চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তাইওয়ান তার গণতন্ত্র রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে এই দ্বীপ ভূখণ্ডের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন মন্তব্য করেছেন। একই সঙ্গে তাইওয়ানের পতন হলে তা এই অঞ্চলে ‘বিপর্যয়কর পরিণতি’ ডেকে আনবে বলেও হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন তিনি।
তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে চীনা যুদ্ধবিমানের রেকর্ড-ভাঙা অনুপ্রেবেশের পর মঙ্গলবার মার্কিন ম্যাগাজিন ফরেইন অ্যাফেয়ার্সে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সাই ইং-ওয়েন। একই দিন তাইওয়ানের প্রধানমন্ত্রী সু সেং চ্যাং বলেছেন, আকাশ সীমায় চীনা কার্যক্রম এই অঞ্চলের শান্তি বিঘ্নিত করেছে এবং তাইওয়ানকে সতর্ক থাকা দরকার।
চলতি অক্টোবরের প্রথম চারদিনই চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) তাইওয়ানের আকাশসীমায় প্রায় ১৫০টি যুদ্ধবিমারে অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে। চীনের গণমাধ্যমের খবরে যুদ্ধবিমানের এই অনুপ্রবেশকে শক্তিপ্রদর্শন বলে মন্তব্য করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার চীনের এ ধরনের কার্যক্রমকে ‘ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং আগ্রাসন’ হিসেবে উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে।
ফরেইন অ্যাফেয়ার্স সাময়িকীতে লেখা নিবন্ধে সাই তাইওয়ানের শান্তিকামী আকাঙ্ক্ষার ব্যাপারে জোর দিয়েছেন। তবে তিনি বলেছেন, যদি তাইওয়ানের গণতন্ত্র এবং জনগণের জীবন হুমকির মুখোমুখি হয়; তাহলে নিজেদের রক্ষায় প্রয়োজনীয় সবকিছুই করবে তাইওয়ান।
এছাড়া বেইজিংয়ের বৃহত্তর হুমকি এবং চীনের সাথে কাজ করার মূল্য বুঝতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সাই বলেছেন, ‘এবং তাদের মনে রাখা উচিত যে, যদি তাইওয়ানের পতন হয়, তাহলে তার পরিণতি আঞ্চলিক শান্তি এবং গণতান্ত্রিক জোট ব্যবস্থার জন্য বিপর্যয়কর হবে।’
তাইওয়ানকে নিজেদের একটি প্রদেশ হিসেবে মনে করে চীন এবং প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে তা দখলে নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে দেশটি। সাই ইং-ওয়েন নেতৃত্বাধীন সরকারকে চীন বিচ্ছিন্নতাবাদী মনে করে। কিন্তু তাইওয়ানের এই প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তাইওয়ান ইতোমধ্যে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র; যার স্বাধীনতা ঘোষণার কোনও প্রয়োজন নেই এবং সংঘাতে জড়ানোর কোনও ইচ্ছাও নেই।
‘পিপলস লিবারেশন আর্মির প্রায় প্রত্যেকদিনের অনুপ্রবেশের মধ্যেও চীন-তাইওয়ান সম্পর্কে আমাদের অবস্থানের অবিচল থাকবে: চাপের কাছে তাইওয়ান মাথা নত করবে না, এমনকি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন পেলেও হঠকারী হয়ে উঠবে না।’
সাই লিখেছেন, পূর্ব চীন এবং দক্ষিণ চীন সাগরের পাশাপাশি তাইওয়ান প্রণালীতে সশস্ত্র সংঘাত রোধে প্রতিবেশীদের সাথে সহযোগিতার সম্পর্ক রক্ষায় তাইওয়ান পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।
এসএস