কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়: পিএইচডি ডিগ্রিধারী সরিয়ে বিএ পাস ভিসি নিয়োগ
আফগানিস্তানের কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ডিগ্রিধারী ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) ড. মুহাম্মদ ওসমান বাবুরিকে বরখাস্ত করে বিএ ডিগ্রিধারী এক নেতাকে তার স্থলাভিষিক্ত করেছে দেশটির নতুন শাসকগোষ্ঠী তালেবান। বুধবার নতুন এই ভাইস-চ্যান্সেলর নিয়োগের প্রতিবাদে কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৭০ জন শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন; যাদের মধ্যে সহযোগী অধ্যাপক এবং অধ্যাপকও রয়েছেন।
নতুন ভাইস-চ্যান্সেলর মুহাম্মদ আশরাফ গাইরাত বিএ ডিগ্রিধারী। তার এই নিয়োগের বিরোধিতা করেছেন তালেবানের অনেক নেতাও। কাবুলের বৃহত্তম এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মুহাম্মদ আশরাফ গাইরাতকে ভাইস-চ্যান্সেলর নিয়োগ দেওয়ায় দেশটিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক প্রতিবাদের ঝড় শুরু হয়েছে। সমালোচকরা গত বছর আশরাফ গাইরাতের ‘সাংবাদিকদের হত্যার পক্ষে সাফাই গাওয়া’ টুইট শেয়ার করে সমালোচনা করছেন।
দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য খামা প্রেস নিউজ এজেন্সি বলছে, আফগানিস্তানের প্রথম দিকের এবং সবচেয়ে ভালো এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী এবং পিএইচডি ডিগ্রিধারী ভাইস-চ্যান্সেলরকে সরিয়ে একেবারে তরুণ স্নাতক ডিগ্রিধারী তালেবান নেতাকে নিয়োগ দেওয়ায় লোকজন প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন।
সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে এমনকি তালেবানের অনেক নেতাও আফগানিস্তানের নতুন সরকারের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। তারা বলেছেন, বিএ ডিগ্রিধারী আশরাফ গাইরাতের চেয়েও অনেক বেশি যোগ্য মানুষ আছে।
দ্য খামা প্রেস বলছে, আগের সরকারে দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কর্মরত ছিলেন আশরাফ গাইরাত। একই সঙ্গে তিনি আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আইইএ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মূল্যায়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান ছিলেন।
এর আগে, সোমবার দেশটির সরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে তালেবান। আফগান সাবেক প্রেসিডেন্ট বুরহানউদ্দিন রব্বানির নামে প্রতিষ্ঠিত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয় কাবুল এডুকেশন ইউনিভার্সিটি।
২০০৯ সালে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিজ বাসভবনে নিহত হন বুরহানউদ্দিন রব্বানি। পরে তার নামে সরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয়।
দ্য খামা প্রেস বলছে, দেশটির উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আফগানিস্তানের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ। এসব বিশ্ববিদ্যালয় কোনও রাজনৈতিক অথবা জাতিগত নেতার নামে হওয়া উচিত নয়।
তালেবানের সরকারের ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, গত দুই দশক ধরে আফগানিস্তানে ভাষাগত, আঞ্চলিক এবং জাতিগত বৈষম্য বিরাজমান আছে এবং এমন বৈষম্যের ভিত্তিতেই জাতীয় স্থানগুলোর নামকরণ করা হয়েছে।
এসএস