পাকিস্তানে হিন্দু পরিবারকে মারধর, অপরাধ মসজিদ থেকে পানি পান
মসজিদের ট্যাপ থেকে পানি পানের ‘অপরাধে’ আলম রাম ভীল নামের এক হিন্দু দিনমজুর ও তার পরিবারের সদস্যদের বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। পাকিস্তানের পাঞ্জাব রাজ্যের রহিমইয়ার খান শহরে ঘটেছে এই ঘটনা।
সোমবার এক প্রতিবেদনে পাকিস্তানের জাতীয় দৈনিক ডন জানিয়েছে, শুক্রবার অন্যান্য দিনের মতোই গ্রামের তুলাক্ষেতে কাজ করছিলেন আলম রাম ভীল, তার স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।
দুপুরের দিকে পানির তৃষ্ণা পেলে রাম ভীল ও তার পরিবারের কয়েকজন কাছের একটি মসজিদে গিয়ে পানির ট্যাপ খুলে পানি পান করেন; সেসময় স্থানীয় ভূস্বামীদের অনুগত লোকজন সেই দৃশ্য দেখে তাদের মসজিদ চত্বরেই একদফা মারধর ও গালিগালাজ করেন।
তারপর তারা যখন ক্ষেতের কাজে ফেরেন, তখন ভূস্বামীদের লোকজন ফের তাদের ওপর চড়াও হন এবং মসজিদের ‘পবিত্রতা নষ্টের’ অভিযোগে আরেক দফা মারধর করেন।
যে এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে, সেটি পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির আইনপ্রণেতা জাভেদ ওয়ারিশের সংসদীয় আসনের অন্তর্ভূক্ত। তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের (পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফ) একজন নেতা।
পাকিস্তানের জাতীয় দৈনিক ডন জানিয়েছে, এই ঘটনায় মামলা করতে স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে গিয়েছিলেন আলম রাম ভিল কিন্তু অভিযুক্ত ভূস্বামী ও তাদের লোকজন জাভেদ ওয়ারিশের ঘনিষ্ট হওয়ায় পুলিশ কোনো মামলা নেয়নি।
পিটিআইয়ের সংখ্যালঘু বিষয়ক কমিটির দক্ষিণ পাঞ্জাব শাখার মহাসচিব যুধিষ্ঠির চৌহান ডনকে জানিয়েছেন, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন, তবে যেহেতু আক্রমণকারীরা পিটিআইয়ের এমপির লোক, তাই তিনি বিষয়টি থেকে দূরে থাকতে চান।
পাঞ্জাব জেলা পুলিশ কর্মকর্তা আসাদ সরফরাজ অবশ্য বলেছেন, পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
পাকিস্তানের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। দেশটির সরকারি হিসেবে পাকিস্তানে বর্তমানে ৭৫ লাখ হিন্দু আছেন, তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের হিসেব অনুযায়ী, পাকিস্তানে বসবাসরত হিন্দুর সংখ্যা ৯০ লাখ।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটি বড় অংশ থাকেন দেশটির সিন্ধু প্রদেশে। তবে প্রায় সময়েই তারা স্থানীয় মৌলবাদী মুসলিমদের আক্রমণের শিকার হন বলে অভিযোগ আছে।
এসএমডব্লিউ