কাবুলের পটপরিবর্তনে ভারতে পোস্তের কেজি ৩ হাজার টাকা!
বাঙালিসহ অনেকেরই খাবারের তালিকায় ওপরের দিকেই রয়েছে পোস্তের নাম। তবে আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতীয় বাঙালির খাবারের তালিকা থেকে পোস্ত বড়া, আলুপোস্ত, পোস্ত বাটা চলে যেতে বসেছে রূপকথার পাতায়। অন্তত এমনটিই দাবি করছেন করছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীরা। সেখানে এক কেজি পোস্তের দাম উঠেছে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যগুলো বলছে, অতি সুস্বাদু পোস্তের মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে প্রতি ক্ষণে ক্ষণে। আর তা দেখে এই খাবার আর খেতে পাওয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন ও জল্পনা গুমরে ফিরছে দীর্ঘশ্বাসের সঙ্গে। বৃহস্পতিবার কলকাতার হাওড়া-বাগনানের খুচরা বাজারে পোস্তের দাম ছিল প্রতি কেজি ২৫০০ টাকা। অন্যদিকে প্যাকেটজাত পোস্ত ৩০০০ টাকা। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সর্বত্র চিত্রটা একই রকম। পোস্তের দাম শুনে মুখ ফিরিয়ে নিতে হচ্ছে মানুষকে।
তবে এই বাড়াবাড়ি দাম বৃদ্ধির পেছনে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় তালেবানের আসীন হওয়াকেই দোষী সাব্যস্ত করছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ। তাদের দাবি, আফগানিস্তানের উত্তপ্ত পরিস্থিতির কারণে সেখান থেকে পোস্তের সরবরাহে ভাটা পড়ছে। আর তাই ভারতে এই মূল্যবৃদ্ধি।
রাজ্যটির নদীয়ার ব্যবসায়ী সুভাষ বণিক বলছেন, আফগানিস্তানে ক্ষমতার পালাবদলের পর থেকে সে-দেশের সঙ্গে ভারতের ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক ভাবে হচ্ছে না। তবে বাঁকুড়ার পাইকারি পোস্ত বিক্রেতা দেবেন্দ্র আগরওয়াল সরাসরি ভারত সরকারকেই দোষারোপ করছেন। তার ভাষায়, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিই এই মূল্যবৃদ্ধির কারণ। সরকার বিদেশ থেকে পোস্ত আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে।’
ব্যবসায়ী সমিতি জানাচ্ছে, তুরস্ক থেকেও পোস্ত আমদানি করত ভারত। কিন্তু বছর দুয়েক আগে সেই আমদানিও নিষিদ্ধ করেছে দেশটির নরেন্দ্র মোদির সরকার।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার পাইকারি বাজারে তিন ধরনের পোস্ত বিক্রি হয়। পোস্তা ব্যবসায়ী উন্নয়ন সমিতির সভাপতি বরুণ মল্লিক জানান, বৃহস্পতিবার সবচেয়ে ভালে মানের পোস্তের পাইকারি দর ছিল ২২০০ টাকা কেজি। খুচরা বাজারে যার দাম ২৩০০-২৪০০ টাকা। আবার দু’হাজার টাকা কেজির পোস্ত খুচরা বাজারে ২১৫০-২২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১৮০০ টাকা কেজির পাইকারি পোস্ত খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৯০০-২০০০ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতের উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানের কিছু জায়গায় যে পরিমাণ পোস্ত উৎপাদন হয়, তার বেশিরভাগই কিনে নেয় পশ্চিমবঙ্গ। যদিও তা পশ্চিমবঙ্গের মোট চাহিদার মাত্র ১০ শতাংশ। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ না হওয়ায় দু’বছর ধরে পোস্তের দাম হু হু করে বাড়ছে। সেই ঊর্ধ্বগতি কবে কোথায় থামবে, বোঝা যাচ্ছে না।
টিএম