পাঞ্জশিরে হামলার কঠোর নিন্দা জানাল ইরান
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের পাঞ্জশির উপত্যকায় প্রতিরোধযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে তালেবানের সামরিক অভিযানের কঠোর নিন্দা জানিয়েছে ইরান। প্রতিরোধযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে তালেবানের এই উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবির পর সোমবার তেহরান নিন্দা জানিয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাঈদ খতিবজাদেহ বলেছেন, পাঞ্জশির থেকে যে খবর আসছে তা আসলেই উদ্বেগজনক। সেখানে হামলার তীব্র নিন্দা জানায় ইরান।
গত ১৫ আগস্ট সুন্নিপন্থী সশস্ত্র ইসলামি গোষ্ঠী তালেবান কাবুল দখলে নেওয়ার পর এই প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সমালোচনা করেছে ওই অঞ্চলের প্রভাবশালী শিয়াপন্থী মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরান।
প্রতিরোধযোদ্ধাদের উৎখাতের মাধ্যমে সোমবার পার্বত্য অঞ্চল পাঞ্জশির দখলে নেওয়ার দাবি করেছে তালেবান। ইসলামি এই গোষ্ঠীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, আমাদের দেশকে যুদ্ধের কবল থেকে পুরোপুরি মুক্ত করা হয়েছে। রাজধানী কাবুল দখলের তিন সপ্তাহ পর পুরো দেশে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
দেশটির সাবেক আফগান নিরাপত্তা কর্মী ও প্রতিরোধযোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত দেশটির তালেবানবিরোধী মিলিশিয়া জোট ন্যাশনাল রেসিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (এনআরএফ) বলেছে, ‘পাঞ্জশির উপত্যকায় এখনও তাদের যোদ্ধারা কৌশলগত অবস্থানে রয়েছে। তারা তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রেখেছে।’
খতিবজাদেহ বলেছেন, ‘পাঞ্জশির প্রশ্নে, আমি এই বিষয়ে জোর দিয়েছি যে, আফগানিস্তানের সব প্রবীণ আলেমদের উপস্থিতিতে সংলাপের মাধ্যমে এই সংকটের সমাধান করা উচিত।’
তিনি বলেন, তালেবানকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইন ও বাধ্যবাধকতা এবং তাদের প্রতিশ্রুতির প্রতি সমানভাবে সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। সব আফগানের জন্য একটি প্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠায় এবং আফগানিস্তানের জনগণের সব ধরনের ভোগান্তির অবসানে ইরান কাজ করবে বলেও মন্তব্য করেছে খতিবজাদেহ।
পাকিস্তানের প্রতি ইঙ্গিত করে সাঈদ খতিবজাদেহ বলেছেন, ‘আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপের নিন্দা জানায় ইরান।’
আফগানিস্তানের সঙ্গে ইরানের ৯০০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের ক্ষমতা থাকা তালেবানকেও তখনও স্বীকৃতি দেয়নি ইরান। দেশটিতে এখনও প্রায় ৩৫ লাখ আফগান শরণার্থী হিসেবে বসবাস করছেন এবং তালেবান ক্ষমতায় আসায় শরণার্থীর ঢল আবারও শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে তেহরান।
সূত্র: এএফপি।
এসএস