কাশ্মিরে আফগানিস্তানের খবর প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা
কাশ্মির ইস্যুতে ভারত ও পাকিস্তানের বিবাদ দীর্ঘদিনের। উভয় দেশই এককভাবে কাশ্মিরের দাবিদার। তবে এক্ষেত্রে তৃতীয় কোনো দেশের হস্তক্ষেপ চায় না ভারত। বিষয়টিকে কেবলই দ্বিপাক্ষিক বলে দাবি করে থাকে নয়া দিল্লি।
তবে কাশ্মিরের মুসলিমদের নিয়ে কথা বলার অধিকার রয়েছে বলে তালেবান দাবি করার পরেই নড়েচড়ে বসেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও জম্মু-কাশ্মিরের প্রশাসন। স্থানীয় সংবাদপত্রগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, তালেবান তথা আফগানিস্তানের ব্যাপারে কোনো কিছু লেখা যাবে না।
কাশ্মির ইস্যুতে তালেবানের এমন বক্তব্য সামনে আসার আগে থেকেই অবশ্য জম্মু-কাশ্মিরের প্রশাসন আফগানিস্তানের পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছিল। গত ১৫ আগস্ট তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি যখন দেশ ছাড়েন, কাশ্মিরের সংবাদপত্রগুলো সেই খবর প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশ করেছিল।
পরের দিনই তথ্য কর্মকর্তার দফতর থেকে পত্রিকার সম্পাদকদের ডেকে বলে দেওয়া হয়, তালেবান কিংবা আফগানিস্তানের প্রসঙ্গে কোনো খবর যদি তারা প্রকাশ করেন, তা হলে সরকারি বিজ্ঞাপন মিলবে না।
স্থানীয় একটি উর্দু পত্রিকার সম্পাদক জানিয়েছেন, ‘তথ্য কর্মকর্তার দফতর থেকে আমাদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আফগানিস্তান নিয়ে কোনো কিছু লেখা চলবে না।’
এমনকি তালেবান ও আফগানিস্তান নিয়ে কোনো সংবাদ প্রকাশ করলে সরকারি বিজ্ঞাপন পাওয়া যাবে না বলেও কাশ্মিরের পত্রিকাগুলোর সম্পাদকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। এ কারণে শনিবার কাশ্মির নিয়ে তালেবানের বক্তব্য উপত্যকাটির কোনো পত্রিকায় প্রকাশিত হয়নি।
এছাড়া কাশ্মিরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ও হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলী শাহ গিলানির মৃত্যুর খবরও কাশ্মিরের পত্রিকাগুলোতে গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয়নি। সম্পাদকেরা জানাচ্ছেন, জম্মু-কাশ্মিরের উপরাজ্যপাল মনোজ সিনহার মিডিয়া উপদেষ্টা এ নিয়ে বড় খবর না করার জন্যই তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
অঘোষিত এই সব নির্দেশের মধ্যে সংবাদপত্রগুলোতে তা হলে কী ছাপছে? কাশ্মিরের খবরের কাগজগুলোতে সবচেয়ে বেশি জায়গা মিলছে জম্মু-কাশ্মিরের উপরাজ্যপাল মনোজ সিনহার। বছর বছর সংঘর্ষের মধ্যে খবর করে টিকে রয়েছে কাশ্মিরের সংবাদপত্রগুলো। সেদিকে নজর রাখা এক গবেষকের ভাষায়, ‘মনোজ সিনহা যে প্রচার পাচ্ছেন, তা অভূতপূর্ব। নরেন্দ্র মোদিও পান না।’
পাশাপাশি, কাশ্মিরের খবর করার ক্ষেত্রেও কিছু পরিবর্তন এসেছে। যেমন, এনকাউন্টারের প্রসঙ্গ এলে পুলিশের বক্তব্যই প্রকাশ করছে সংবাদপত্রগুলো।
টিএম