‘আমাদের বিজয় অন্য হানাদারদের জন্য শিক্ষা’
দুই দশকের যুদ্ধ শেষে যুক্তরাষ্ট্রের শেষ সৈন্যদলের আফগানিস্তান ত্যাগকে নিজেদের ‘পূর্ণাঙ্গ বিজয়’ বলে অভিহিত করে ফাঁকা গুলি ছুড়ে উদযাপন করেছে দেশটির কট্টর ইসলামপন্থী গোষ্ঠী তালেবান। সোমবার মধ্যরাতে মার্কিন সৈন্যরা আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাওয়ার পর কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তালেবানের সদস্যদের বিজয় উদযাপন করতে দেখা যায়।
সৈন্যদের কাবুলের বিমানবন্দর ত্যাগের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘতম সামরিক সংঘাতের সমাপ্তি ঘটে সোমবার রাতে। গত ১৪ আগস্ট তালেবান রাজধানী কাবুল দখলের মাধ্যমে পুরো দেশের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কব্জায় নেওয়ার পর এক লাখ ২৩ হাজারের বেশি মানুষকে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেয় পশ্চিমারা।
মার্কিন সৈন্যদের বিদায়ের পরপর কাবুল বিমানবন্দরে প্রবেশ করে তালেবানের সশস্ত্র সদস্যরা। ২০০১ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোটের অভিযানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া তালেবান আবারও ক্ষমতায় ফেরায় আকাশে ফাঁকা গুলি ছুড়ে বিজয় উদযাপন করে।
এর কয়েক ঘণ্টা পর বিমানবন্দরের রানওয়েতে শীর্ষ নেতাদের নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ। এ সময় তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানকে অভিনন্দন... এই বিজয় আমাদের সবার।’
মুজাহিদ বলেন, ‘তালেবানের এই জয় অন্য হানাদারদের জন্য শিক্ষা।’
আফগানিস্তানের অনেক নাগরিক ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের কট্টর শাসনের পুনরাবৃত্তি ঘটতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ওই সময় নারীদের চাকরি থেকে বঞ্চিত এবং মেয়েদের স্কুল শিক্ষা নিষিদ্ধ করে তালেবান। এর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের কঠোর বিধি-বিধান আরোপ করে সশস্ত্র এই গোষ্ঠী।
দেশটির ক্ষমতার মসনদে আবারও তালেবান ফেরায় অতীতের সেই শাসন আবারও ফেরার আশঙ্কায় গত দুই সপ্তাহে হাজার হাজার আফগান কাবুল ছাড়ার চেষ্টা করেন। তবে তালেবান এবারে অধিক সহনশীল এবং প্রথমবারের শাসনের তুলনায় শিথিলতা অবলম্বন করবে বলে বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
যদিও কাবুল দখলে নেওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ ইসলামি শরিয়া আইনেই দেশের সবকিছু পরিচালিত হবে বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বের সাথে সুসম্পর্ক রাখতে চাই। আমরা সবার সাথে কূটনৈতিক সুসম্পর্ককে স্বাগত জানাই। তালেবানের নিরাপত্তা বাহিনী বিনয়ী এবং ভদ্র হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সূত্র: এএফপি।
এসএস