জার্মানি: করোনা টিকার বদলে ৮৬০০ মানুষের শরীরে স্যালাইন পুশ
করোনাভাইরাস মহামারিতে বিপর্যস্ত সারা বিশ্ব। মহামারিকে হারিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে বিশ্বের অনেক দেশেই চলছে করোনার টিকাদান কার্যক্রম। তবে মানুষকে টিকা দেওয়া নিয়েও ঘটছে নানা নেতিবাচক ঘটনা। যার সর্বশেষ উদাহরণ বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ উন্নত দেশ জার্মানির একটি ঘটনা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, করোনা মহামারি প্রতিরোধে চলমান টিকাদান কর্মসূচির মধ্যে প্রায় ৮ হাজার ৬০০ জনের শরীরে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের পরিবর্তে স্যালাইন পুশের ঘটনা ঘটেছে।
বিষয়টি নিয়ে পরে পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং রেড ক্রসের একজন নার্স এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে ধারণা করা হয়। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এখন ওই ৮ হাজার ৬০০ মানুষকে নতুন করে করোনা টিকা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে।
গা শিউরে ওঠার মতো এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর জার্মানির নর্থ সি কোস্ট এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চল ফ্রাইসল্যান্ডে। গত বসন্তের শুরুতে এই ঘটনা ঘটলেও সম্প্রতি তা সামনে এসেছে। সেসময় ফ্রাইসল্যান্ডের টিকাদান কেন্দ্রে অভিযুক্ত ওই নার্স মানুষের শরীরে আসল করোনা টিকার পরিবর্তে ইনজেকশনের মাধ্যমে স্যালাইন পুশ করেন।
এদিকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ভুক্তভোগী ৮ হাজার ৬০০ জনকে ফের টিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গত মঙ্গলবার একটি নির্দেশনা জারি করে। স্থানীয় কাউন্সিলর এসভেন অ্যামব্রোসি ফেসবুকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত বলে জানিয়েছেন।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানবদেহে স্যালাইন প্রবেশ ক্ষতিকর কিছু নয়। তবে গত মার্চ ও এপ্রিলে - যখন স্যালাইন পুশের এই ঘটনা ঘটেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে - ফ্রাইসল্যান্ড এলাকার বেশিরভাগ বয়স্ক ব্যক্তি টিকা নিয়েছিলেন। আর তারাই এখন করোনা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে করোনা টিকা না দিয়ে মানবদেহে স্যালাইন পুশের এই ঘটনার পেছনের কারণ এখনও জানা যায়নি। এছাড়া সন্দেহভাজন অভিযুক্ত ওই নার্সেরও নামও প্রকাশ করেনি পুলিশ। পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, ইতোপূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করোনা টিকার সমালোচনা ও কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ জানিয়ে বেশ কিছু পোস্ট দিয়েছিলেন অভিযুক্ত ওই নার্স।
অবশ্য তদন্ত শুরু হলেও ওই নার্সকে আটক বা ভ্যাকসিন প্রতারণার মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে কি না সেটি এখনও পরিষ্কার নয়। তবে সম্প্রচারমাধ্যম এনডিআর জানিয়েছে, ভ্যাকসিন প্রতারণা সংক্রান্ত এই মামলাটি স্পেশাল ইউনিটের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা সাধারণত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপরাধ সংক্রান্ত মামলাগুলোর তদন্ত করে থাকে।
টিএম