সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়াল ইন্দোনেশিয়া
এক মাসেরও বেশি সময় বিধিনিষেধ জারির পরও করোনায় দৈনিক আক্রান্ত-মৃত্যু নিয়ন্ত্রণে না আসায় তার মেয়াদ আরও বাড়িয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া। সোমবার এক বিবৃতিতে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বুদি গুনাদি সাদিকিন এ তথ্য জানিয়েছেন।
নতুন সরকারি নির্দেশনা সম্পর্কে বিবৃতিতে মন্ত্রী জানান, ইন্দোনেশিয়ার বৃহত্তম দ্বীপ জাভা ও পর্যটন দ্বীপ বালিতে বিধিনিষেধ বাড়ানো হয়েছে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলে আগামী ২৩ আগস্ট পর্যন্ত বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে।
সোমাবারের বিবৃতিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, দোকান-পাট, মার্কেট ও শপিংমলসমূহকে তাদের ২৫ শতাংশ লোকবল নিয়ে ব্যাবসায়িক কার্যক্রম শুরু করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করা ব্যক্তিরাই কেবল এসব স্থানে যেতে পারবেন।
অবশ্য শিশু ও বৃদ্ধদেরকে এর আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। পাশপাশি, টিকার ডোজ সম্পূর্ন করা নাগরিকদের টিকা সনদের ডিজিটাল অনুলিপি সবসময় সঙ্গে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বুদি গুনাদি সাদিকিন আরও জানিয়েছেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করার ওপর নির্ভর করবে ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকরা কে কতখানি সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। উদাহারণ হিসেবে তিনি বলেন, সরকার পর্যটন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং শুধু টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করার ব্যক্তিদেররই এসব সেবা গ্রহণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য টিকা বাধ্যতামূলক না হলেও প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষার্থী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করা বাধ্যতামূলক বলে সোমবার জানিয়েছেন বুদি গুনাদি সাদিকিন।
করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ধরন ডেল্টার প্রভাবে বিশ্বের চতুর্থ জনবহুল দেশ ইন্দোনেশিয়ায় ভয়াবহ রূপ নিয়েছে সংক্রমণ চিত্র। গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে দেশটিতে প্রতিদিন করোনায় মারা যাচ্ছেন ১২ শ’ থেকে ১৫ শ’ মানুষ।
২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত এ রোগে দৈনিক আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসেব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহ ধরে করোনায় দৈনিক মৃত্যুতে বিশ্বের দেশসমূহের মধ্যে শীর্ষে আছে ইন্দোনেশিয়া।
দেশটির স্বাস্থ্যসেবা দফতরের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানী জাকার্তা ও তার আশপাশের এলাকাসমূহে করোনা সংক্রমণ ও হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা কিছু কমলেও সুমাত্রা, সুলাওয়েসি ও গোরনতালো দ্বীপে এখনও উর্ধ্বমূখী আছে দৈনিক আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা।
জনগণকে সরকারের নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে সোমবার পৃথক এক বার্তায় ইন্দোনেশিয়ার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লুহুত পান্দজাইতান বলেন, ‘মহামারির বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করে যাচ্ছি এবং প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ প্রাণহানি সত্ত্বেও কিছু অর্জন আমাদের আছে। জনগণের প্রতি আহ্বান- খামখেয়ালী আচরণ করে এই অর্জন নষ্ট করবেন না।’
সূত্র : রয়টার্স
এসএমডব্লিউ