তালেবানের দখলে আরেক প্রাদেশিক রাজধানী
আফগানিস্তানের আরেক প্রাদেশিক রাজধানীর দখল নিয়েছে তালেবান। আজ শনিবার উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ জাওজানের রাজধানী শেবেরগান দখলের আগে শুক্রবার বিকেলে তালেবান দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় নিমরোজ প্রদেশের রাজধানী জারাঞ্জ দখল করে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী শনিবার দুপুরে শেবেরগান দখলের পর তালেবান এক কারাগারের সব বন্দিকে মুক্ত করে দিয়েছে। প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তালেবান হামলা চালানোর পর ওই কারাগারটি থেকে শত শত বন্দি বেরিয়ে আসছে।
শুক্রবার রাতভর তীব্র লড়াইয়ের পর তালেবান শহরের সরকারি ভবনগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয়। তবে ওই অঞ্চলের একজন কাউন্সিল প্রধান বাবুর এশচি বলেছেন, তালেবান একটি সেনাঘাঁটি ছাড়া পুরো শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। সেখানে এখনো লড়াই চলছে।
শেবারগান সাবেক আফগান ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুর রশিদ দোস্তামের একটি শক্ত ঘাঁটি। তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে তার অনুগত সমর্থকরা। লড়াইয়ে সরকারি বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য ১৫০ জন লোক শেবারগানে এসেছে।
সারা আফগানিস্তানে বিভিন্ন অংশে যখন যুদ্ধ চলছে তখন নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য এটি আরেকটি বড় আঘাত। মার্কিন সৈন্যরা আফগানিস্তান ছাড়ার পর থেকে দেশটির বিভিন্ন অংশে তীব্র যুদ্ধ চালিয়ে তালেবান একের পর এক এলাকা দখল করে নিচ্ছে।
শুক্রবার প্রথম কোনো প্রাদেশিক রাজধানী হিসেবে জারাঞ্জ শহর দখল করে তালেবান। জারাঞ্জ ও শেবেরগান তালেবানের হাতে চলে গেলো। এদিকে হেরাত, লস্কর গাহ ও কান্দাহারসহ আরও কিছু প্রাদেশিক রাজধানীতে ঢুকে পড়েছে তালেবানের যোদ্ধারা।
গতকাল শুক্রবার তালেবানের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়া জারাঞ্জ হচ্ছে ইরান সীমান্তের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এক বাণিজ্য কেন্দ্র। এই শহরের চারদিকের এলাকা দখল করে নেওয়ার পর তালেবান জারাঞ্জ দখলের জন্য অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছিল।
তালেবানের হাতে জারাঞ্জের পতনের বিষয়টি অবশ্য স্বীকার করেনি আশরাফ গনি নেতৃত্বাধীন আফগান সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, তালেবানের বিরুদ্ধে এখনো জারাঞ্জে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে কাবুল সরকার নিয়ন্ত্রিত নিরাপত্তা বাহিনী।
দেশটির প্রধান শহরগুলোর ভাগ্য নিয়ে ভীষণ উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। উভয়পক্ষ নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দখলে নিতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে সরকারি সেনারা কতদিন নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারবে সেটাই বড় প্রশ্ন। স্থানীয়রাও বাড়িঘর ছেড়ে পালাচ্ছেন।
বিবিসি বলছে, তালেবান মিলিশিয়ারা ইতোমধ্যে অর্ধেক আফগানিস্তান নিজেদের দখলে নিয়েছে। এর মধ্যে প্রতিবেশী দুই দেশ পাকিস্তান ও ইরানের সঙ্গে ‘বর্ডার ক্রসিং’ রয়েছে। তবে তালেবান অবশ্য দেশের ৯০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করছে।
এএস