জার্মানি: টিকা না নিলে কমবে স্বাধীনতা
করোনাভাইরাস মহামারিতে সারা বিশ্ব কার্যত বিপর্যস্ত। আর তাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই চলছে জোরগতিতে টিকাদান কর্মসূচি। তবে অনেকেই এর কার্যকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে সন্দেহের কারণে টিকা নিতে ইচ্ছুক নন।
এই পরিস্থিতিতে জার্মানিতে যারা কোভিড-১৯ প্রতিরোধী টিকা নেবে না তাদের চলাফেরার স্বাধীনতা কমে আসতে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন অ্যাঙ্গেলা মেরকেল সরকার।
জার্মান চ্যান্সেলরের জেষ্ঠ্য উপদেষ্টা হেলগে ব্রাউন বলেন, সুযোগ থাকা সত্ত্বেও যারা টিকা নেবেন না তাদের ক্ষেত্রে যারা টিকা নিয়েছেন তাদের তুলনায় চলাফেরার স্বাধীনতা কমিয়ে আনা হতে পারে। তিনি বলেন, ‘যারা টিকা নেবেন না তাদেরকে বার, সিনেমা হল কিংবা খেলার মাঠে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হতে পারে।’
ইউরোপের দেশ জার্মানিতে করোনার তৃতীয় ঢেউ চলছে। এরমধ্যে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও গত দুই সপ্তাহ ধরে সংক্রমণের হার আবারও বাড়ছে। রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের তথ্য বিশ্লেষণ করে সংবাদমাধ্যম দ্য লোকাল জানিয়েছে, জার্মানিতে গত শুক্রবার প্রতি লাখে সংক্রমণের হার ছিল ১৩ দশমিক ২ শতাংশ। তার আগে সংক্রমণের হার ছিল ১২ দশমিক ২ শতাংশ। আর ৬ জুলাই সংক্রমণের হার ছিল ৪ দশমিক ৯ শতাংশ।
সংক্রমণের এমন ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশটিতে করোনার চতুর্থ ঢেউয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সবাইকে টিকা দেওয়ার চেষ্টা করছে জার্মানির সরকার। সবর্শেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে প্রাপ্তবয়স্কদের শতকরা ৬০ ভাগ ইতোমধ্যে অন্তত এক ডোজ টিকা পেয়েছেন। তবে টিকাদান প্রক্রিয়া ধীর গতিতে চলছে বলে অভিযোগ করেছেন সমালোচকরা।
হেলগে ব্রাউন বলেন, ‘জার্মানিতে করোনা ভাইরাসের চতুর্থ ঢেউয়ের মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। করোনা টেস্টে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি পাওয়া গেলে যারা টিকা নেননি তাদেরকে সামাজিক যোগাযোগ এড়িয়ে চলতে হবে।’
পেশায় চিকিৎসক এ উপদেষ্টা বলেন, ‘টিকার ফলে আমরা সংক্রমণ থেকে শতকরা ৯০ ভাগ সুরক্ষিত থাকি। আর তাই যারা টিকা পেয়েছেন তারা টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের তুলনায় বেশি স্বাধীনতা ভোগ করবে।’
সোমবার (২৬ জুলাই) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬ হাজার ৬৫৫ জন।এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৪১ লাখ ৭৪ হাজার ৬৬৩ জনে।
এছাড়া, একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ২২ হাজার ৯৮৫ জন। এতে মহামারির শুরু থেকে ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ কোটি ৪৭ লাখ ৯৭ হাজার ১১৪ জনে।
করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ওপরের দিকেই নাম রয়েছে জার্মানির। মহামারি শুরুর পর থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩৭ লাখ ৬৩ হাজারের বেশি মানুষ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত এবং ৯২ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন।
টিএম