তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে সরিয়ে পার্লামেন্ট ভাঙলেন প্রেসিডেন্ট
তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করে পার্লামেন্ট ভেঙে দিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইয়েদ। করোনাভাইরাস ও অর্থনৈতিক মন্দার বিরুদ্ধে চলমান গণবিক্ষোভের মুখে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিলেন।
রোববার প্রেসিডেন্টের বাসভবনে জরুরি বৈঠকের পর এক বিবৃতে প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইয়েদ ঘোষণা করেছেন যে, তিনি নতুন প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় এবার নিজেই দায়িত্ব নেবেন। তার দাবি, তিনি দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনতে চান। কিন্তু বিরোধীরা তার এই পদক্ষেপকে সামরিক অভ্যুত্থান হিসাবে আখ্যা দিয়েছে।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে কায়েস সাইয়েদ বলেছেন, জনগণের অধিকার নিয়ে ভন্ডামি, বিশ্বাসঘাতকতার ফলে বহু মানুষ প্রতারিত হয়েছেন।
তিনি সহিংস প্রতিক্রিয়ার বিরুদ্ধে সতর্ক করে বলেছেন, কেউ সশস্ত্র আন্দোলনের কথা ভাবলে তাদের আমি সতর্ক করছি... কেউ গুলি চালালে সশস্ত্র বাহিনী তা বুলেটের মাধ্যমেই জবাব দেবে।
তিনি বিবৃতিতে বলেছেন, তার কাজ সংবিধানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তিনি সংসদ সদস্যদের দায়মুক্তি স্থগিত করেছেন।
তিউনিশিয়ার পার্লামেন্টের স্পিকার ও মধ্যপন্থী ইসলামি দল এন্নাহদা পার্টির প্রধান রাশেদ ঘানোচি এ পদক্ষেপের পর প্রেসিডেন্ট সাইয়েদকে ‘বিপ্লব ও সংবিধানের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান’ চালানোর অভিযোগ করেছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, আমরা মনে করি প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো টিকে আছে। এন্নাহদার সমর্থক ও তিউনিসিয়ার জনগণ এ বিক্ষোভ প্রতিহত করবেন।
প্রেসিডেন্ট সাইয়েদ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে করোনা মহামারির ও অর্থনৈতিক ধসের কারণে প্রধানমন্ত্রী মেচিচির সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন।
তিউনিসভিত্তিক সাংবাদিক রাবেব আলৌই আল জাজিরাকে বলেন, সাইয়েদের পদক্ষেপ বিস্মিত হইনি। কারণ তিনি সংসদ ভেঙে দেওয়া ও প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করার হুমকি দিয়েছিলেন। গত সেপ্টেম্বর থেকে আমরা একটি রাজনৈতিক সংকটে পড়েছি।
তিনি আরও বলেন, অনেক তিউনিসিয়ান বিশেষত যারা রোববার বিক্ষোভ করছেন তারা এই ঘোষণায় আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তবে বিক্ষোভকারীরা সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারেরও আহ্বান জানিয়েছিল। এখন এ বিষয়গুলো সমাধান করা দরকার। আমরা সত্যিই একটি অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্য সংকটে রয়েছি।
দেশটিতে চলমান দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় সেবা হ্রাস, বেকারত্ব বৃদ্ধির ফলে বহু তিউনিসিয়ান তাদের রাজনৈতিক পদ্ধতি নিয়ে করোনা মহামারির আগে থেকেই ক্ষুব্ধ। মহামারি দেশেটির অর্থনৈতিক বিপর্যয় আরও বাড়িয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের ডাকা এ বিক্ষোভে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন নেই বলে জানা গেছে। চলমান বিক্ষোভের ফলে পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল এন্নাহদা পার্টি সংকটে পড়তে পারে। কারণ বিক্ষোভকারীরা সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিল ইসলামপন্থী দল এন্নাহদা পার্টির বিরুদ্ধে।
সূত্র : রয়টার্স ও আলজাজিরা
ওএফ