ইন্দোনেশিয়ায় ১৭ দিনে ১১৪ চিকিৎসকের প্রাণ কাড়ল করোনা
অতি-সংক্রামক ধরন ডেল্টার তীব্র সংক্রমণের মাঝে জুলাইয়ের প্রথমার্ধে ইন্দোনেশিয়ায় কোভিডে চিকিৎসকদের মৃত্যু ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির চিকিৎসা পেশাজীবীদের একটি সংগঠন বলেছে, চলতি মাসের প্রথমার্ধে করোনায় শতাধিক চিকিৎসকের প্রাণহানি ঘটেছে।
এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে ইন্দোনেশিয়া চিকিৎসক সংস্থার (আইডিএ) কর্মকর্তারা বলেছেন, গত ১ থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত দেশে করোনায় ১১৪ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে মাত্র ১৭ দিনে করোনায় এতসংখ্যক চিকিৎসকের মৃত্যু অতীতের যেকোনও সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ। মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে কোভিড-১৯ ইন্দোনেশিয়ায় এখন পর্যন্ত ৫৪৫ জন চিকিৎসকের প্রাণ কেড়েছে। কিন্তু গত ১৭ দিনের ওই সংখ্যা মহামারিতে মোট মৃত চিকিৎসকের ২০ শতাংশেরও বেশি।
আইডিএর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মহেসা পরানাদীপা বলেছেন, আইডিএ উদ্বিগ্ন যে, মৃত্যুর রেকর্ড অনুযায়ী দেশের মেডিকেল ব্যবস্থার এই মহামারির প্রকোপ সামলানোর সক্ষমতা থাকবে না।
তিনি বলেন, আমরা মেডিকেল কর্মকাণ্ডের সম্ভাব্য ধস নিয়ে উদ্বিগ্ন। এটা শুধুমাত্র আমাদের কাছে আসা ডেটা। চিকিৎসকের মৃত্যু নিয়ে আমাদের কাছে এখনও কিছু ডেটা আসেনি।
ইন্দোনেশিয়ার স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রায় ৯৫ শতাংশকে টিকা দেওয়া সত্ত্বেও চিকিৎসকদের মৃত্যু বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে বিশ্বের চতুর্থ জনবহুল এই দেশটির সরকার স্বাস্থ্য কর্মীদের চীনের সিনোভ্যাকের টিকা দেওয়ার পর এখন যুক্তরাষ্ট্রের মডার্নার বুস্টার ডোজ দিচ্ছে।
ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট অতিমাত্রায় ছড়িয়ে পড়ায় গত কয়েকদিন ধরে বিশ্বের যেকোনও দেশের তুলনায় সবচেয়ে বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ায়। গত সাতদিন রয়টার্সের করোনা ট্র্যাকারে এমন তথ্য উঠে এসেছে। এছাড়া গত কয়েকদিন ধরে মৃত্যুর হিসেবে ব্রাজিলের পর দ্বিতীয় স্থানে আছে দেশটি।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বিশ্বে করোনাভাইরাইসের নতুন উপকেন্দ্র হিসেবে ইন্দোনেশিয়াকে শনাক্ত করেছে। রোববারও দেশটিতে করোনায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ হাজার ৭২১ জন এবং মারা গেছেন ১ হাজার ৯৩ জন।
ভাইরাসের বিস্তারের গতি ধীর করতে গত ৩ জুলাই ইন্দোনেশিয়ার সরকার কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করে। যা আগামী মঙ্গলবার শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এই বিধি-নিষেধের মেয়াদ আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলেও আইডিএর কর্মকর্তা আদিব খুমাইদি কোনও মন্তব্য করেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
এসএস