জুমা সমর্থকদের ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে দক্ষিণ আফ্রিকা
দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে দেশটির জনগণ। রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সাবেক এই প্রেসিডেন্টের অনুগামীরা। এ ঘটনায় কয়েক ডজন মানুষকে আটক করেছে দেশটির পুলিশ।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, কয়েকদিন আগে আদালত অবমাননার অভিযোগে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে দেশটির একটি আদালত তাকে ১৫ মাসের কারাবাসের রায় দেয়।
এরই প্রতিবাদে দক্ষিণ আফ্রিকার বেশ কিছু অঞ্চলে তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। রাস্তায় রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। বেশ কিছু জায়গায় দোকানে ও ব্যবসা প্রাতষ্ঠানে লুটপাট চালানো হয়েছে বলেও পুলিশ জানিয়েছে।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল জ্যাকব জুমার এলাকা কোয়াজুলু-নাটালে। রোববার তা ছড়িয়ে পড়ে দেশের সবচেয়ে বড় শহর জোহানেসবার্গে। বিক্ষোভের সময় একের পর এক দোকান লুট হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এদিকে জোহানেসবার্গের একটি দোকান থেকে এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের হাতেই তার মৃত্যু হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়াও বহু মানুষ আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ এখনও পর্যন্ত ৩৭ জনকে গ্রেফতার করেছে।
জ্যাকব জুমা ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। ক্ষমতায় থাকাকালীন ঘুষসহ দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত ছিলেন তিনি ও তার সরকার। দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।
অবশ্য ৭৯ বছর বয়সী সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে গেছেন। এ সম্পর্কে তার বক্তব্য ছিল- দেশের বিরোধীপক্ষ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এসব মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।
ওই অভিযোগের ভিত্তিতে একটি তদন্ত কমিটির সামনে তাকে হাজির হতে বলা হয়েছিল। কিন্তু জুমা সেখানে হাজির হননি। এরপরেই তার বিরুদ্ধে শাস্তির রায় ঘোষণা করে আদালত। সোমবার দেশের সুপ্রিম কোর্টে ফের মামলাটির শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আন্দোলনের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হন জ্যাকব জুমা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তার প্রশাসনের লোকেরা যখন ব্যাপক মাত্রায় দুর্নীতি করছিল, তখন তিনি চোখ বুঁজে ছিলেন।
টিএম