ভেতরে প্রেমিকের বিয়ে, বাইরে প্রেমিকার আহাজারি
অচেনা থেকে চেনা। বন্ধু থেকে প্রেমিক। তারপর টানা চার বছর চলেছে প্রেমের সম্পর্ক। অথচ প্রেমিকের মনের হদিশই হয়তো পাননি প্রেমিকা। টানা চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর হঠাৎ খবর পেলেন- প্রেমিক বিয়ের মণ্ডপে বসে, অন্য কারও সঙ্গে।
এরপরও আশা ছাড়েননি। তাই দৌড়ে গিয়েছিলেন বিয়ের আসরে। ভেবেছিলেন, বিধ্বস্ত অবস্থায় তাকে দেখে হয়তো প্রেমিকের মন ফিরে যাবে। কিন্তু সবকিছু উজাড় করে দিয়েছিলেন যাকে, এক বারের জন্য ফিরেও তাকাল না সে। শুনতে আবেগঘন সিনেমার কোনো দৃশ্যের মতো হলেও, বাস্তবে ঠিক এমন দৃশ্যই দেখা গেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশে। অনলাইনের বিভিন্ন মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে এই ঘটনার ভিডিও।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, মধ্যপ্রদেশের হোশঙ্গাবাদের কোঠি বাজারের কামাখ্যা গার্ডেনে সম্প্রতি একটি বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। দামী ফুল, রঙিন কাপড়ে ঢেকে গিয়েছিল অনুষ্ঠানস্থল। সানাইয়ের সুর শোনা যাচ্ছিল সকাল থেকেই।
কিন্তু আচমকাই ছন্দপতন। একে একে অতিথিরা যখন ভিড় করছেন, হঠাৎ সেখানে হাজির হন উদভ্রান্ত চেহারার এক তরুণী। ‘বাবু’, ‘বাবু’ বলে কাতর স্বরে কাউকে ডাকতে শুরু করেন তিনি। মূল ফটক টপকে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু কয়েকজন লোক তাকে ঠেলে বের করে মূল ফটকটি বন্ধ করে দেন।
তাতেও হাল না ছেড়ে লোহার ফটক ধরে ঝাঁকাতে থাকেন তিনি। কাতর স্বরে বলতে থাকেন, ‘এক বার আমার বাবুকে ডেকে দিন। একটি বারের জন্য ডেকে দিন। আমি শুধু এক বার কথা বলতে চাই।’ এসময় হাত ধরে টেনে হিঁচড়ে বেশ কয়েকবার তাকে সরানোর চেষ্টা করেন অনেকে। কিন্তু নাছোড়বান্দা তরুণী জানিয়ে দেন, ‘বাবু’র সঙ্গে দেখা না করে একচুলও নড়বেন না তিনি।
ভেতরে জমকালোভাবে বিয়ের অনুষ্ঠান চললেও বাইরে এমন দৃশ্য দেখে থমকে যান মানুষও। তাদের ওই তরুণী জানান, যার বিয়েতে এত আয়োজন, তার সঙ্গে চার বছরের সম্পর্ক তার। তিন বছর সহবাসও করেছেন। কিন্তু তাকে না জানিয়েই এখন অন্য কারও সঙ্গে বিয়ে করছেন তার প্রেমিক।
অবশ্য তরুণীর এই দাবি উড়িয়ে দেন অভিযুক্ত ছেলেটির পরিবারের লোকজন। তাকে অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে চলে যেতে বলেন। তাতে কাজ না হওয়ায় পুলিশে খবর দেন। পুলিশই এসে ওই তরুণীকে সরিয়ে নিয়ে যায়।
পুলিশকে ওই তরুণী জানান, প্রেমিক অন্য কাউকে বিয়ে করছেন, তাতে আপত্তি নেই তার। কিন্তু সেটা তাকে জানানো উচিত ছিল। এত দিনের সম্পর্ক সত্ত্বেও কেন তার সঙ্গে এমন আচরণ করা হলো, তিনি শুধু সেটার উত্তর চান।
হোশঙ্গাবাদ কোতোয়ালি থানার এসআই শ্রদ্ধা রাজপুত ওই তরুণীর অভিযোগ শুনে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু ওই তরুণী সাফ জানিয়ে দেন, প্রেমিককে থানা-পুলিশের চক্করে ফাঁসাতে চান না তিনি। তারপর নিজে থেকেই বাড়ি ফিরে যান।
তবে ওই তরুণী ভগ্ন হৃদয়ে বাড়ি ফিরে গেলেও, তাকে অনলাইনে ভালবাসা উজাড় করে দিয়েছেন অনেক মানুষ। তাদের মতে, কতটা ভালবাসলে মান-সম্মান ভুলে এ ভাবে ছুটে যাওয়া যায়। যদিও কারও কারও মতে, অভিযুক্ত যুবক আসলে কখনও তাকে ভালবাসেননি। তার জন্য এ ভাবে কেঁদে বেড়ানো অর্থহীন।
টিএম