হাইতিতে প্রেসিডেন্টের ঘাতকদের সঙ্গে তীব্র গোলাগুলি, নিহত ৪
হাইতির প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোয়েসের হত্যাকারী সন্দেহভাজন ঘাতকদের সঙ্গে দেশটির পুলিশের তীব্র গোলাগুলি চলছে। দেশটির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সে বৃহস্পতিবার পুলিশের সঙ্গে এই গোলাগুলিতে অন্তত চার সন্দেহভাজন নিহত হয়েছেন বলে খবর দিয়েছে বিবিসি।
দেশটির পুলিশের প্রধান লিওন চার্লস বলেছেন, চার সন্দেহভাজন নিহত ও আরও দু’জনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া এখনও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন। তাদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পুলিশের এই প্রধান বলেছেন, তাদের (প্রেসিডেন্টের হত্যাকারী) আটক অথবা হত্যা করা হবে।
এর আগে, বুধবার গভীর রাতে ক্যারিবীয় অঞ্চলের এই দেশটির প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোয়েসেকে নিজ বাড়িতে গুলি চালিয়ে হত্যা করে একদল অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত। রাতের আঁধারে রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সে ব্যক্তিগত বাসভবনে আততায়ীরা তাকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে।
সন্দেহভাজন ঘাতকদের বিরুদ্ধে পুলিশের নাটকীয় অভিযানের বর্ণনা দিয়েছেন পুলিশ প্রধান চার্লস। তিনি বলেছেন, ‘আমরা অপরাধস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার সব রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছি। তারপর থেকেই তাদের সঙ্গে পুলিশ সদস্যরা লড়ছেন।’
দেশটির কর্মকর্তারা বলেছেন, সন্দেহভাজনরা অস্ত্রেশস্ত্রে সুসজ্জিত এবং পুলিশের তিন কর্মকর্তাকে জিম্মি করেছিল। পরে পুলিশের এই কর্মকর্তাদের মুক্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তার স্বার্থে বাড়িতে অবস্থানের আহ্বান জানিয়েছেন হাইতির পুলিশ প্রধান চার্লস।
এক নজরে হাইতি
• দেশটির মোট জনসংখ্যা এক কোটি ১০ লাখ
• প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করেন
• স্থিতিশীলতায় সহায়তায় ২০০৪-০৭ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা অবস্থান করেন
• ২০১০ সালে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ২ লাখের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে
• সম্প্রতি দেশটিতে রাজনৈতিক সহিংসতা বৃদ্ধি পায়
দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী ক্লদ জোসেফ এক বিবৃতিতে এই হত্যাকাণ্ডকে ‘অমানবিক এবং বর্বরোচিত’ বলে নিন্দা জানিয়েছেন। মোয়েসের একেবারে কাছে থেকে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছে এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। দেশটির ম্যাজিস্ট্রেট কার্ল হেনরি ডেস্টিন স্থানীয় দৈনিক নোভেলিস্টকে বলেছেন, প্রেসিডেন্টের মরদেহে অন্তত ১২টি বুলেটের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
ফার্স্ট লেডি মার্টিন মোয়েসেও গুলিতে আহত হয়েছেন এবং তাকে ফ্লোরিডায় নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তীব্র ভয়ে জনমানবশূন্য রাস্তাঘাট
ওই হত্যাকাণ্ডের পর হাইতির রাস্তাঘাট মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রীর শান্ত থাকার আহ্বানে সাড়া দিয়ে লোকজন বাড়িতে অবস্থান করছেন।
প্রধানমন্ত্রী জোসেফ দেশটিতে দুই সপ্তাহের জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। একই সঙ্গে জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা এবং সেনাবাহিনীকে শান্তিশৃঙ্খলা ফেরাতে নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট মোয়েস হত্যাকাণ্ডের নিন্দা এবং দেশে আর যাতে কোনও ধরনের অস্থিতিশীলতা তৈরি না হয়, সেজন্য সব পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
এসএস