যুক্তরাষ্ট্রে ৭০ মিলিয়ন মুক্তিপণ দাবি হ্যাকারদের
যুক্তরাষ্ট্রের সফটওয়্যার কোম্পানি কেসায়াতে সাইবার হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত ‘র্যানসমওয়্যার’ হ্যাকার গ্রুপ। সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে দিতে কোম্পানিটির কাছে ৭০ মিলিয়ন ডলার বা ৫৯০ কোটি টাকা দাবি করেছে হ্যাকাররা।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি নেটওয়ার্ক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান কেসায়ার সিস্টেমে হামলা চালায় ‘আরইভিল’ নামের একটি হ্যাকার গ্রুপ। এতে অন্তত ১৭টি দেশের কয়েকশো কোম্পানি বিপদে পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক কার্যক্রম।
আরইভিল নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে দিতে বিটকয়েনের মাধ্যমে সাত কোটি ডলার ‘মুক্তিপণ’ দাবি করেছে। এই হ্যাকার গ্রুপ বিশ্বের সবচেয়ে বড় মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান জেবিএস-এ হামলা চালিয়ে এক কোটি ১০ লাখ ডলার হাতিয়ে নিয়েছিল।
এদিকে এই ঘটনা তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। যুক্তরাষ্ট্রে এমন হামলার সঙ্গে ক্রেমলিনের কোন যোগসূত্র থাকলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তার জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বাইডেন।
এফবিআই তদন্ত শুরু করছে। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগের উপপরামর্শক অ্যানি নিউবার্গার বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন হামলার তদন্তে সর্বোচ্চ সক্ষমতা ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন। হামলার শিকার হলে সে বিষয়ে এফবিআইকে তথ্য দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মিয়ামিভিত্তিক কেসায়া বিভিন্ন কোম্পানিকে নেটওয়ার্ক ও সফটওয়্যার সেবা দেয়। আর্থিক খাত থেকে শুরু করে পর্যটন ও খুচরা এমনকি বিভিন্ন দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের প্রযুক্তি ব্যবহার করে। তাদের সেবা গ্রহীতা কোম্পানিগুলো এই হামলার শিকার হয়েছে।
অর্থ লেনদেনের সফটওয়্যারে জটিলতার কারণে সুইডেনে কুপ নামের এক চেইন শপ তাদের ৮০০টি শাখা গত শনিবার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। দেশটিতে একটি ওষুধ চেইন, গ্যাস স্টেশন চেইন, রাষ্ট্রীয় রেলওয়ে ও সরকারি গণমাধ্যমও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএ’র প্রতিবেদন অনুযাযী, দেশটিতে একটি প্রযুক্তি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার কাস্টমার র্যানসমওয়্যার বা ডেটা আত্মসাতের শিকার হয়েছেন। দুইটি বৃহৎ ডাচ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানও সমস্যায় পড়ার কথা জানিয়েছে।
কেসায়ার প্রধান নির্বাহী ফ্রেড ভকোলা বলেছেন, হামলার শিকার হওয়াদের মধ্যে বেশিরভাগই ছোট ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান যার মধ্যে দাঁতের ক্লিনিক থেকে শুরু করে স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান, প্লাস্টিক সার্জারি সেন্টার, এমনকি লাইব্রেরিও রয়েছে।
আরএভিল’র এই সাইবার হামলায় সব মিলিয়ে ৫০ থেকে ৬০টি প্রতিষ্ঠানের ৩৭ হাজার গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ম্যানডিয়ান্টকে দায়িত্ব দিয়েছে কেসায়া।
এএস