আব্বাস-বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় ফিলিস্তিনিকে আটক করল ইসরায়েল
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার পর ফিলিস্তিনের একজন মানবাধিকার আইনজীবীকে আটক করেছে ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনী। আটককৃত ওই আইনজীবীর নাম ফরিদ আল-আতরাশ। পশ্চিমতীরে আব্বাস-বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার পরই তাকে আটক করা হয়।
ফরিদ আল-আতরাশ মানবাধিকার সংস্থা দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট কমিশন ফর হিউম্যান রাইটস (আইসিএইচআর)-এ কাজ করেন। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, পশ্চিমতীরের রামাল্লায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শেষে পূর্ব জেরুজালেমের একটি ইসরায়েলি তল্লাশি চৌকি থেকে রোববার তাকে আটক করা হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রামাল্লা থেকে বেথলেহেমের দিকে যাওয়ার সময় আল-আতরাশকে আটক করা হয় এবং পরে তাকে ইসরায়েলের হাদাসাহ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করেছে সংস্থাটি।
ফিলিস্তিনের আরেক মানবাধিকার কর্মী এবং আল-আতরাশের বন্ধু ঈসা আমরো জানিয়েছেন, হাসপাতালে নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই সেখান থেকে তাকে ফের নিরাপত্তা হেফাজতে নেওয়া হয় এবং ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাকে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এটা এখনও পরিষ্কার নয় যে- তাকে আসলে কেন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
অবশ্য এ বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
উল্লেখ্য, ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিমতীরে ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আটক অবস্থায় একজন রাজনৈতিক কর্মীর মৃত্যুর পর ফিলিস্তিনিদের মধ্যে তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে গভীর অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। নিজার বানাত নামের এই ফিলিস্তিনিকে তার বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা বাহিনী।
আটক থাকা অবস্থায় তাকে যে মারাত্মকভাবে পেটানো হয়েছিল, সেরকম অনেক প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। এই ঘটনায় বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে এবং শত শত মানুষ ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের পদত্যাগ দাবি করে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নিন্দা করে বিক্ষোভকারীরা ‘শাসকগোষ্ঠীকে উৎখাত করো’ বলে স্লোগান দেয়। এক দশক আগে আরব বিশ্ব জুড়ে যে গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল, তখন এই স্লোগানটিই শোনা যেত।
রামাল্লায় যখন বিক্ষোভ চলছিল, তখন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সাদা পোশাকধারী লোকজন লাঠি এবং ইট-পাটকেল দিয়ে এই বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায়। রামাল্লা থেকেই ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ তাদের কাজ-কর্ম চালায়। এ ঘটনায় ক্ষোভ আরও তীব্র হয়েছে এবং ভিন্নমতকে দমন করা হচ্ছে বলে উদ্বেগ বেড়েছে।
নিজার বানাতের মৃত্যুর পর জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর এ ঘটনার তদন্ত দাবি করেছে। ওই মৃত্যুর প্রতিবাদেই ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন মানবাধিকার আইনজীবী ফরিদ আল-আতরাশ।
সূত্র: আলজাজিরা
টিএম