খোঁজ মিলছে না সাড়ে ১২ লাখ ভারতীয় শিক্ষার্থীর
করোনাভাইরাস মহামারিতে অনেক কিছুই বদলে গেছে। অনেকে কাজ হারিয়েছেন। অনেকের উপার্জন কমেছে। প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ স্কুল-কলেজসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিছুদিন আগে অনলাইনে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু হলেও বিস্ময়কর একটি পরিসংখ্যান দেখে চোখ কপালে উঠেছে ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য হরিয়ানার। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, মহামারির এই দেড় বছরে হরিয়ানার বেসরকারি স্কুলগুলোর ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী একপ্রকার উধাও হয়ে গেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, করোনা পরিস্থিতিতে চলমান অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে সম্প্রতি হরিয়ানার রাজ্যের শিক্ষা দফতরে রিপোর্ট জমা দেয় রাজ্যটির বেসরকারি স্কুলগুলো। রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ২০২০ শিক্ষাবর্ষে যেখানে ২৯ লাখ ৮৩ হাজার শিক্ষার্থীর নাম নিবন্ধন করা হয়েছিল, সেখানে চলতি বছর নাম নিবন্ধন করেছে মাত্র ১৭ লাখ ৩১ হাজার জন শিক্ষার্থী।
অর্থাৎ প্রায় সাড়ে ১২ লাখ শিক্ষার্থী ‘নিখোঁজ’। যা মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ। মাত্র একটি শিক্ষাবর্ষে এত বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়ে যাওয়াটা এককথায় অবিশ্বাস্য।
প্রশ্ন উঠেছে, এত বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী কোথায় গেল? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা মহামারির কারণে অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকই হয় কাজ হারিয়েছেন, না-হয় উপার্জন কমে গেছে। আর এই ধরনের শিক্ষার্থীরা হয়তো বেসরকারি স্কুল ছেড়ে সরকারি স্কুলে ভর্তি হয়েছে। এমনিতেও হরিয়ানায় সরকারি স্কুলের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার। যা বেসরকারি স্কুলের তুলনায় অনেকটাই বেশি।
বেসরকারি স্কুল থেকে সরকারি স্কুলে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হলেও স্কুল পরিবর্তনের নথি থাকার কথা। সে হিসেবও মিলছে না। এই সাড়ে ১২ লাখ শিক্ষার্থী কি তবে স্কুল থেকেই ঝরে পড়ল? উঠছে সেই প্রশ্নও।
যদিও অনেকে বলছেন, ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে হরিয়ানায় গিয়ে বাস করেন বহু পরিযায়ী শ্রমিক। হয়তো লকডাউনের কারণে তারা বাড়ি ফিরে গেছেন। তাদের সঙ্গে ঘরে ফিরেছেন তাদের সন্তানরাও। কিংবা এই পরিযায়ী শ্রমিকদের ছেলেমেয়েরা হয়তো এখন আর বেসরকারি স্কুলে না পড়ে সরকারি স্কুলে পড়াশোনা করছে।
টিএম