দেশে একজন করোনা রোগীও পাওয়া যায়নি, ডব্লিউএইচওকে জানাল উ. কোরিয়া
দেশের ৩০ হাজারের বেশি মানুষের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করে একজনের শরীরেও এই ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া। গত ১০ জুন পর্যন্ত দেশের মানুষের করোনা পরীক্ষার পর উত্তর কোরিয়া এই তথ্য জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থাকে দিয়েছে বলে খবর দিয়েছে মার্কিন বার্তাসংস্থা এপি।
ডব্লিউএইচওর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়া এখন পর্যন্ত ৩০ হাজারের বেশি নাগরিকের করোনা পরীক্ষা করেছে। এর মধ্যে গত ৪ থেকে ১০ জুন পর্যন্ত ৭৩৩ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়। তাদের মধ্যে মাত্র ১৪৯ জনের ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো অসুস্থতা অথবা তীব্র শ্বাস-প্রশ্বাসের সংক্রমণের সমস্যা শনাক্ত হয়েছে।
তবে একজনও করোনা রোগী না পাওয়ার যে দাবি উত্তর কোরিয়া করেছে সে ব্যাপারে ব্যাপক সন্দেহ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার চিকিৎসা ব্যবস্থা অত্যন্ত নিম্নমানের এবং দেশটির প্রধান মিত্র ও অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি চীনের সঙ্গেও সীমান্ত রয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারির শুরুর দিকে যখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসের বিস্তার ঘটে; তখনও উত্তর কোরিয়া-চীন সীমান্ত খোলা ছিল। এছাড়া উত্তর কোরিয়ার নাগরিকরা চীনের সীমান্ত লাগোয়া শহরগুলো থেকে অনেক পণ্য-সামগ্রী চোরাচালান করে থাকেন।
তারপরও করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের এই প্রতিবেশি রাষ্ট্রে ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত না হওয়ার দাবি বিশ্বাস করতে পারছেন না স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তবে বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারি ব্যাপক আকার ধারণ করলে উত্তর কোরিয়া পর্যটক নিষিদ্ধ, বিদেশি কূটনৈতিকদের দেশ ছাড়ার নির্দেশ, আন্তসীমান্ত বাণিজ্য এবং চলাচলে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে দেওয়া প্রতিবেদনে ভাইরাস-প্রতিরোধী প্রচেষ্টাকে ‘দেশের অস্তিত্বের বিষয়’ বলে বর্ণনা করেছে উত্তর কোরিয়া। গত কয়েক দশকের অব্যবস্থাপনা এবং পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির জেরে মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত অর্থনীতিতে স্ব-আরোপিত লকডাউন আরও চাপ তৈরি করেছে।
গত সপ্তাহে এক রাজনৈতিক সম্মেলনে অংশ নিয়ে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন দেশটির কর্মকর্তাদেরকে করোনাভাইরাসের বিধি-নিষেধ আরও দীর্ঘায়িত করার আহ্বান জানান। দেশটি এখনও সীমান্ত খুলে দেওয়ার জন্য যে প্রস্তুত নয় তা কিম জং উনের এই আহ্বানে পরিষ্কার হয়েছে।
সূত্র: এপি।
এসএস