টিকার ১০০ কোটি ডোজ প্রয়োগের মাইলফলকে চীন
করোনাভাইরাসের টিকার ১০০ কোটি ডোজ প্রয়োগের মাইলফলক ছাড়িয়ে গেছে চীন; যা বিশ্বজুড়ে দেওয়া টিকার তুলনায় প্রায় এক তৃতীয়াংশ। রোববার দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এই তথ্য জানিয়েছেন বলে খবর দিয়েছে ফরাসী বার্তাসংস্থা এএফপি।
দেশটির সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপি বলছে, শুক্রবার বিশ্বজুড়ে আড়াইশ’ কোটি টিকা প্রয়োগের মাইলফলক অতিক্রান্ত হওয়ার পর চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন ওই ঘোষণা দিয়েছে।
তবে দেশটিতে এখন পর্যন্ত কত শতাংশ মানুষকে টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে সেটি পরিষ্কার নয়। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সফল লড়াইয়ের পর ধীরগতিতে টিকাদান শুরু করেছিল চীন। স্বচ্ছতার অভাব এবং পূর্ববর্তী ভ্যাকসিন কেলেঙ্কারির কারণে দেশটির বাসিন্দাদের মধ্যে টিকার প্রতি অনীহা তৈরি হয়েছিল।
কর্তৃপক্ষ চলতি মাসের শেষের আগেই দেশটির ১৪০ কোটি মানুষের প্রায় ৪০ শতাংশকে পুরোপুরি টিকার আওতায় আনার উচ্চ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
বর্তমানে অনেক প্রদেশে লোকজনকে টিকা নেওয়ায় আগ্রহী করে তুলতে বিনামূল্যে ভ্যাকসিনের প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় আনহুই প্রদেশের লোকজনকে টিকা নেওয়া হলে বিনামূল্যে ডিম এবং বেইজিংয়ের বাসিন্দাদের শপিং কুপন দেওয়ার অফার দেওয়া হচ্ছে।
সম্প্রতি দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংঝু প্রদেশে করোনাভাইরাসের অতি-সংক্রামক ডেল্টা ধরনের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়েছে। নতুন করে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ায় এই অঞ্চলের লোকজন টিকা নিতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
রোববার চীনে নতুন করে অন্তত ২৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনাভাইরাসের উৎসস্থল চীনে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসের চারটি ভ্যাকসিন শর্ত সাপেক্ষে অনুমোদন পেয়েছে। তবে চীনে অনুমোদন পাওয়া ভ্যাকসিনগুলোর কার্যকারিতার হার ফাইজার-বায়োএনটেক এবং মডার্নার ভ্যাকসিনের তুলনায় অনেক কম।
ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিনের শেষ ধাপের পরীক্ষায় কার্যকারিতার হার ৯৫ শতাংশ এবং মডার্নার ৯৪ শতাংশ প্রমাণিত হয়েছে।
এর আগে চীনের সিনোভ্যাক জানায়, ব্রাজিলে চালানো পরীক্ষায় দেখা যায়— নিজেদের তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার হার প্রায় ৫০ শতাংশ এবং মেডিক্যালে ভর্তি ঠেকাতে ৮০ শতাংশ কার্যকর। এছাড়া সিনোফার্মের দুটি ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার হার যথাক্রমে ৭৯ এবং ৭২ শতাংশ।
অন্যদিকে, গবেষণায় ক্যানসিনো বায়োফার্মার তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার হার ২৮ দিন পর ৬৫ শতাংশ মিলেছে। এই ভ্যাকসিনগুলোর বেশিরভাগেরই দুটি ডোজের প্রয়োজন হয়।
গত এপ্রিলে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানায়, চলতি বছরে ৩০০ কোটিরও বেশি ডোজ উৎপাদনের প্রত্যাশা করছে চীন। কিন্তু চীন কবে নাগাদ হার্ড ইমিউনিটিতে পৌঁছাবে অথবা তাদের উৎপাদিত ভ্যাকসিনের কত শতাংশ রফতানি করা হবে সেব্যাপারে এখন পর্যন্ত কিছু বলেনি দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
এসএস