জিরাফের চেয়েও দীর্ঘকায় গণ্ডারের জীবাশ্মের সন্ধান চীনে
বিশ্বে এযাবৎকালের সর্ববৃহৎ স্থলচর প্রাণীর জীবাশ্মের সন্ধান মিলেছে চীনে। বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার কমিউনিকেশন্সে সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণা নিবন্ধের বরাত দিয়ে করা এক প্রতিবেদনে শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘প্যারাসেরাথেরিয়াম লিনাক্সিয়েন্স’ নামের এই অতিকায় প্রাণীটি ছিল মাটি থেকে ২৩ ফুট উঁচু, যা একটি পূর্ণবয়স্ক জিরাফের উচ্চতার চাইতেও বেশি এবং এক একটি পূর্ণবয়স্ক ‘প্যারাসেরাথেরিয়াম লিনাক্সিয়েন্স’- এর ওজন ছিল ২১ টনের মতো, যা চারটি আফ্রিকান হাতির ওজনের সমান।
প্রাণীবিদ্যা বিষয়ক চীনা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্সটিটিউট অব ভারট্রেব্রাট প্যালেন্টোলজি অ্যান্ড প্যালেনথ্রোপলজির গবেষণক ড. ডেং তাও বিবিসিকে জানিয়েছেন, প্রাপ্ত জীবাশ্ম বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রাগৈতিহাসিক এই প্রাণীটির সঙ্গে বাহ্যিকভাবে আধুনিক টাপিরের প্রচুর সাদৃশ্য ছিল।
দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন জঙ্গলনিবাসী টাপিরের মতোই এর খুলির সম্মুখভাব সরু এবং নাক কিছুটা ঝুলে পড়া। তাছাড়া গণ্ডারের মতো এই এই প্রাণীটির নাকের ওপর কোনো শিংও ছিল না।
বিবিসিকে ডেং তাও বলেন, ‘তবে বাহ্যিকভাবে তাপিরের সঙ্গে সাদৃশ্য থাকলেও এর চোয়ালের দাঁত ও ডিএনএর সঙ্গে আধুনিক গণ্ডারের সাদৃশ্য বেশি। আমাদের গবেষণা বলছে, আজ থেকে কয়েক লাখ বছর আগে পাকিস্তান ও মধ্য এশিয়ার বনাঞ্চলে যে অতিকায় গণ্ডার ঘুরে বেড়াত, এরা তাদেরই পূর্বপুরুষ ছিল।’
আজ থেকে ২ কোটি ৬০ লাখ ৫০ হাজার বছর আগে উত্তর-পশ্চিম চীন ও বর্তমান পাক-ভারত উপমহাদেশে ঘুরে বেড়ানো এই প্রাণীটির জীবাশ্মের কিছু অংশের সন্ধান প্রথম পাওয়া গিয়েছিল চীনের গানসু প্রদেশে, ২০১৫ সালে। পরবর্তী বছরগুলোতে জীবাশ্মের আরও কিছু অংশের সন্ধান পাওয়া যায় ওই প্রদেশেরই ওয়াংজিয়াচুয়ান গ্রামে।
ডেং তাও বলেন, ‘এই প্রাণীটি বৃষ্টিবহুল এলাকায় থাকতে পছন্দ করত। সে সময়কার ভূ-প্রকৃতিও ভিন্ন ছিল। তিব্বতীয় প্লেটের গঠন বিন্যাসের কারণে সে সময় পাক-ভারত উপমহাদেশের সঙ্গে ভৌগলিকভাবে সম্পর্কযুক্ত ছিল চীনের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চল। তৎকালীন এই বিশাল অঞ্চলে বিচরণ করত এই অতিকায় গণ্ডার।’
সূত্র: বিবিসি
এসএমডব্লিউ