ভারতের সব প্রাপ্তবয়স্ক বিনামূল্যে করোনা টিকা পাবেন: নরেন্দ্র মোদি
ভারতের সব প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিককে বিনামূল্যে করোনা টিকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি বলেন, চলতি জুন মাসের ২১ তারিখ থেকে রাজ্যগুলোকে বিনামূল্যে টিকার ডোজ দেওয়া শুরু করবে কেন্দ্রীয় সরকার।
ভাষণে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘এখন থেকে দেশের গণটিকাদান কর্মসূচি পুরোটাই তত্ত্বাবধান করবে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্যসরকাগুলোর আর এই কাজে সম্পৃক্ত থাকার প্রয়োজন নেই। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ক যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।’
‘এই আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পর আগামী ২১ জুন থেকে রাজ্যগুলোকে বিনামূল্যে করোনা টিকার ডোজ দেওয়া শুরু হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের লক্ষ্য, দেশের সব প্রাপ্তবয়স্ক নাগরকিকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়া।’
যারা বেসরকারি হাসপাতালে টিকা নিতে ইচ্ছুক, তাদের অবশ্য টিকার জন্য খরচ করতে হবে; তবে সেটিও খুব কম। বর্তমানে টিকার ডোজবাবদ বেসরকারি হাসপাতালগুলো যে অর্থ রাখছে, নতুন এই আদেশ কার্যকরের পর এর দাম ৭৫ শতাংশ কমে যাবে।
গত মার্চ থেকে ভারতে শুরু হয়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে মে পর্যন্ত দেশটিতে প্রতিদিন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ থেকে ৪ লাখ মানুষ, মারা গেছেন প্রতিদিন ৪ হাজারের ওপরে।
আক্রান্ত ও মৃত্যুর এই লাগামহীন চিত্রের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্যে দেখা দেয় করোনা টিকার ডোজের ঘাটতি। এই ঘাটতির কারণে দিল্লি, মহারাষ্ট্র, কর্নাটকসহ বিভিন্ন রাজ্যে বহু টিকাকেন্দ্র বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় রাজ্য সরকারগুলো, পাশপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা।
সোমবারের ভাষণে অবশ্য এ জন্য পরোক্ষোভাবে রাজ্য সরকারগুলোর সমারোচনা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘কয়েকটি রাজ্যের সরকার কেন্দ্রকে জানিয়েছিল, তারা টিকাদান কর্মসূচি ব্যবাস্থার দায়িত্ব নিতে পারবে। এ কারণেই কেন্দ্র তাদেরকে কর্মসূচি রাজ্যগুলোর হাতে ছেড়ে দিয়েছিল।’
‘কিন্তু এখন কেন্দ্র সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে। পুরো কর্মসূচির নিয়ন্ত্রণ এখন কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকবে।’
টিকা গ্রহণের পাশাপাশি দেশের জনগণকে করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে মোদি বলেন, ‘শুধু টিকা নিলেই এই অদৃশ্য, প্রতিনিয়ত রূপ পরিবর্তন করা শত্রুর বিরুদ্ধে আমরা জয়ী হতে পারব না। টিকা গ্রহণের পাশাপাশি আমাদের সবাইকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি, অর্থাৎ মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, নিয়মিত ও ঘন ঘন হাত ধোয়া ইত্যাদি মেনে চলতে হবে। তাহলেই আমরা এই মহামারিকে পরাজিত করতে পারব।’