জাপানে ১২১ বছরে সর্বনিম্ন জন্মহারের রেকর্ড
জাপানে ২০২০ সালে বিগত ১২১ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম শিশু জন্ম নিয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর নেপথ্যে মহামারি করোনার কারণে অনেকের বিয়ে আটকে যাওয়া ও নতুন পরিবার শুরুতে মানুষের অনাগ্রহকে দায়ী করা হচ্ছে।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী ২০২০ সালে জাপানে ৮ লাখ ৪০ হাজার ৮৩২ শিশু জন্ম নিয়েছে। এই সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৮ শতাংশ কম এবং ১৮৯৯ সালে এই হিসাব রাখার পর থেকে এক বছরে সর্বনিম্ন জন্মহারের রেকর্ড।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বজুড়েই শিশু জন্মহার অনেকটা কমে গেছে। যদিও মহামারি শুরুর দিকে এমন গুঞ্জন শুরু হয় যে, লকডাউনে মানুষ গৃহবন্দি হয়ে পড়ায় নবজাতকের সংখ্যা বাড়বে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বিশ্বজুড়ে তার উল্টো চিত্র দেখা গেছে।
শুধু জাপান নয় বিশ্বের সর্বাধিক জনবহুল দেশ চীন এবং দক্ষিণ কোরিয়াতে আশঙ্কাজনক হারে জন্মহার কমছে। এতে উদ্বেগ বাড়ছে। চ্যালেঞ্জ মোকবিলায় নেওয়া হচ্ছে পদক্ষেপ।
জাপানে ২০২০ সালে নিবন্ধিত বিয়ে ১২ দশমিক ৩ শতাংশ কমে ৫ লাখ ২৫ হাজার ৪৯০। বিশ্বযুদ্ধের পর যা রেকর্ড সর্বনিম্ন। এ ছাড়া নারীদের মাথাপিছু সন্তান জন্মহারও ১ দশমিক ৩ শতাংশে নেমেছে। গোটা বিশ্বে নারীদের মাথাপিছু সন্তান জন্মহারে যা সবচেয়ে কম।
দীর্ঘদিন ধরে জনমিতি নিয়ে এমন সংকট কাটিয়ে উঠতে হিমশিম খাচ্ছে জাপান। দেশটিতে কয়েক বছর ধরেই জন্মহার নিম্নমুখী। এতে করে এমন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে যে, এভাবে চলতে থাকলে প্রবীণদের সংখ্যা বাড়বে অপরদিকে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যাও কমতে থাকবে।
‘প্রবীণদের দেশ’ হিসেবে পরিচিত জাপানের ২০ শতাংশের বেশি জনগোষ্ঠীর বয়স ৬৫ বছরের বেশি। ২০১৮ সালের হিসাবে দেশটির মোট জনসংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৪০ লাখ। কিন্তু আশঙ্কা করা হচ্ছে, ২০৬৫ সালে জাপানের জনসংখ্যা কমে ৮ কোটি ৮ লাখে দাঁড়াবে।
জাপানের প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ধরে জন্মহার কমছে। ২০২০ সালে দেশটিতে প্রথমবার জন্মের চেয়ে মানুষের মৃত্যুর হার ছিল বেশি। জনসংখ্যাতত্ত্বে এই অবস্থাকে উদ্বেগজনক হিসেবে অভিহিত করা হয়। কারণ এতে একটি দেশের মোট জনসংখ্যা কমে যায়।
বিশ্বের সর্বাধিক জনবহুল দেশ চীনের অবস্থাও একই রকম। ২০১৯ সালের চেয়ে ২০২০ সালে দেশটিতে জন্মহার ১৫ শতাংশ কমেছে। ফলে গত সপ্তাহে দেশটির সরকার নীতি বদলে জানিয়েছে যে, এখন থেকে দুটি নয় প্রত্যেক দম্পতি তিনটি করে সন্তান নিতে পারবেন।
এএস