ডেলটা ধরন ঠেকাতে দুই ডোজের ব্যবধান কমাতে হবে : ল্যানসেট
ভারতে প্রথমবার শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ‘ডেল্টা’র সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য জোরালো অ্যান্টিবডি তৈরি করতে হলে টিকার দুই ডোজের মধ্যে ব্যবধান কমাতে হবে। এমন তথ্যই উঠে এসেছে প্রখ্যাত ব্রিটিশ চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেটের এক সমীক্ষায়।
ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের অন্যতম প্রধান কারণ ভাইরাসটির এই ডেল্টা প্রজাতি। ওই সমীক্ষা জানাচ্ছে, করোনাভাইরাসের আদি প্রজাতির বিরুদ্ধে ফাইজারের তৈরি টিকা যতটা কার্যকরী, করোনার ডেল্টা প্রজাতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ওই টিকা অতটা কার্যকরী নয়।
সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, শুধু প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন এমন মানুষের দেহে ডেল্টা প্রজাতির বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডির প্রতিক্রিয়া অনেক কম। এমনকি টিকার দুটি ডোজের মধ্যে ব্যবধান বেশি হলেও অ্যান্টিবডির প্রতিক্রিয়া উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে বলে দাবি করা হয়েছে।
তবে টিকা নেওয়া থাকলে, কোভিডে সংক্রমিত হলেও হাসপাতালে ভর্তির হার অনেকটা কম হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে ওই রিপোর্টে।
ল্যানসেটের ওই গবেষণায় উঠে এসেছে, ফাইজার টিকার প্রথম ডোজ নিলে করোনার আদি প্রজাতির বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডির প্রতিক্রিয়া ৭৯ শতাংশ। আলফা বা ব্রিটেনের ধরনে ৫০ শতাংশ, ডেল্টা ধরনে ৩২ শতাংশ এবং বিটা বা দক্ষিণ আফ্রিকা ধরনে তা মাত্র ২৫ শতাংশ।
করোনার নতুন ধরন প্রতিরোধের বিষয়টি নিয়ে সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ এমা ওয়াল বলেছেন, ‘আমাদের সমীক্ষার ফল বলছে, নতুন ধরনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকার দ্বিতীয় ডোজ দ্রুত দিতে হবে। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনায় কম তাদের বুস্টার দিতে হবে।’
এই সমীক্ষা ভারত সরকারের টিকাদান নীতিকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। কারণ ডেল্টা ধরন প্রথমবার ভারতে শনাক্ত ও প্রকোপ বেশি হলেও সম্প্রতি দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ‘কোভিশিল্ড’ টিকার দুই ডোজের মধ্যে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
দুই ডোজের ব্যবধান ৬-৮ সপ্তাহ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১২-১৬ সপ্তাহ। যা নিয়ে সমালোচনা চলছে। বিরোধীদের অভিযোগ, টিকার ঘাটতি সামাল দিতেই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত। ল্যানসেটের সমীক্ষাও দুই টিকার ব্যবধান বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলে দিল।
এএস