ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত ৩০ ভারতীয় সেনা, পাচ্ছেন না ওষুধ
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত পুরো ভারত। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হাজারও মানুষ প্রতিদিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আগের তুলনায় কমলেও তা এখনও স্বস্তিদায়ক নয়। এই অবস্থায় ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে আবির্ভূত হয়েছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা কালো ছত্রাক সংক্রমণ। ‘মিউকোরমাইকোসিস’ নামে পরিচিত এই ছত্রাকে আক্রান্ত হচ্ছেন ভারতীয় সেনা সদস্যরাও।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রায় ৩০ জন সদস্য ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদেরকে দেশটির রাজধানী দিল্লির আর্মি রিসার্চ অ্যান্ড রেফারেল হাসপাতাল এবং আর্মি বেস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তাদেরকে জীবনদায়ী ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ওষুধ ‘অ্যাম্ফোটেরিসিন বি’-র সরবরাহ সঠিক ভাবে হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।
রিসার্চ অ্যান্ড রেফারেল হাসপাতালের সেনা চিকিৎসক বলেন, ‘হাসপাতালের মধ্যে বহু সেনা সদস্য ওষুধের জন্য অপেক্ষা করছেন। এতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে শরীরের মধ্যে।’
ভারতে করোনার পাশাপাশি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। এই সংক্রমণকে ইতোমধ্যে মহামারি আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণের সংখ্যা কিছুটা কমে আসার মুহূর্তেই বাড়তে শুরু করেছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্তের সংখ্যা।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সরকারকে ওষুধের ঘাটতি সম্পর্কে জানানো হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ‘অ্যাম্ফোটেরিসিন বি’ ওষুধ প্রয়োজনীয় অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পূরণের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে যা পরিস্থিতি সেক্ষেত্রে ওষুধ হাতে পেতে সামান্য দেরি হলে ছত্রাক সংক্রমণ অনেক বড় আকার নিয়ে ফেলছে। আর এতেই সঠিক কাজের সময় নার্ভাস হয়ে পড়ছেন অনেকে।
আর্মি বেস হাসপাতালের একজন সেনা কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আশির দশকে সিয়াচেন হিমবাহের ওপরে কাটানো সময়ের কথা মনে পড়ছে আমার। সেসময় আমরা অপেক্ষা করে থাকতাম, কখন হেলিকপ্টারে করে জ্বালানি এসে পৌঁছাবে। তবে বেঁচে থাকতে পারব। এখন ঠিক সেই অবস্থা।’
চিকিৎসকরা বলছেন, করোনাভাইরাসের কারণে রোগীর দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যখন কমে যায়, ঠিক তখনই কালো ছত্রাক সংক্রমণ ঘটায়। এই রোগে মুহূর্তেই পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যেতে পারে। সংক্রমণ তীব্র হলে রোগী মারাও যেতে পারেন।
ভারতে এ রোগের চিকিৎসা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশটিতে এখন ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ রোগের চিকিৎসায় মূল ছত্রাক প্রতিরোধী ওষুধ ‘অ্যাম্ফোটেরিসিন বি’ ব্যবহার করা হলেও সরবরাহ না থাকায় সৃষ্টি হয়েছে তীব্র সংকটের।
টিএম