ইউরোপে বন্যা-দাবদাহের ১১ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে ২০২৪ সাল

২০২৪ সালে বছরজুড়ে ইউরোপে বন্যা ও দাবদাহের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের হার ছিল গত ১১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। জাতিসংঘের আবহাওয়া বিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটেওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও) এবং ইউরোপের জলবায়ু গবেষণা সংস্থা সংস্থা কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের (সিথ্রিএস) এক যৌথ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে এ তথ্য।
‘গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে ইউরোপিয়ান স্টেট অব দ্য ক্লাইমেট ২০২৪’ নামের এই প্রতিবেদনটি। সেখানে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ইউরোপের বিশাল অংশজুড়ে বন্যা হয়েছে। উপদ্রুত অঞ্চলের ব্যাপ্তি এত বড় ছিল যে বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০১৩ সালের পর এত বড় বন্যা দেখেনি ইউরোপ।
ব্যাপক এই বন্যায় গত বছর ইউরোপজুড়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৩৫ জন এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আরও অন্তত ৪ লাখ ১৩ হাজার জন। এছাড়া আর্থিক হিসেবে বন্যা, ব্যাপক বর্ষণ ও ঝড়ের কারণে ২০২৪ সালে ১ হাজার ৮০০ কোটি ইউরো বা ২ হাজার ৪০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ইউরোপে। এসব ক্ষয়ক্ষতির ৮৫ শতাংশের জন্য দায়ী বন্যা।
রেকর্ডভাঙা বন্যার পাশাপাশি দাবদাহেও পুড়েছে ইউরোপ। গত বছর দিনের পর দিন ‘মৃদু’, ‘মাঝারি’ ও ‘তীব্র’ দাবদাহ সহ্য করতে হয়েছে ইউরোপের মোট ভূখণ্ডের প্রায় ৬০ শতাংশ অঞ্চলকে। এদিক থেকে রেকর্ড করেছে ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চল। গত জুলাই মাসে টানা ১৩ দিন দক্ষিণ ইউরোপের ৫৫ শতাংশ অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে মাঝারি ও তীব্র তাপপ্রবাহ।
ইউরোপের জলবায়ু গবেষণা সংস্থা সিথ্রিএসের পরিচালক কার্লো বুনটেম্পো এএফপিকে এ প্রসঙ্গে বলেন, “২০২৪ ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘ তাপদাহ দেখেছে দক্ষিণ ইউরোপ। এই তাপদাহের ফলে স্ক্যান্ডিনেভিয়া ও ইউরোপের অন্যান্য অঞ্চলে রেকর্ড পরিমাণ হিমবাগ গলে গেছে। গত বছর যে ব্যাপক বন্যা হলো— হিমবাহ গলে যাওয়া তার একটি কারণ।”
যৌথ প্রতিবেদেনে ডব্লিউএমও-সিথ্রিএসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় ইউরোপের আবহাওয়া সবচেয়ে দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে এবং এটি অব্যাহত থাকলে সামনে আরও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে মহাদেশকে।
সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি
এসএমডব্লিউ