পরমাণু প্রকল্প : যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি সংলাপে যাবে না ইরান

পরমাণু প্রকল্প নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতায় যেতে চাইলেও ওয়াশিংটনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় যেতে চায় না তেহরান। ইরানের পরররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাঈল বাকাই সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
রাজধানী তেহরানে মন্ত্রণালয় কার্যালয়ে আয়োজিত সেই সংবাদ সম্মেলনে বাকাই আরও জানান, ইরানের সরকার এ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনায় আগ্রহী এবং ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা ওয়াশিংটনে পাঠানোও হয়েছে। তবে সেখান থেকে এখনও কোনো সাড়া ফেলেনি।
“আমরা আমাদের প্রস্তাবনায় বলেছি যে মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে চাই, মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আমরা ওমানের নাম প্রস্তাব করেছি। তবে ওয়াশিংটন থেকে এখনও কোনো সাড়া পাইনি,” সংবাদ সম্মেলনে বলেন ইসমাঈল বাকাই।
প্রসঙ্গত, ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে সমঝোতায় আসার জন্য সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে গত মাসে তেহরানকে চিঠি দিয়েছেন ট্রাম্প। সে চিঠিতে দেশটিকে ২ মাসের আল্টিমেটাম দিয়ে ট্রাম্প বলেন, যদি এ দু’মাসের মধ্যে তেহরান সরাসরি আলোচনায় না আসে, সেক্ষেত্রে দেশটি সমঝোতায় অনিচ্ছুক বলে ধরে নেওয়া হবে এবং সেজন্য পরিণতি ভোগ করতে হবে ইরানকে।
চিঠি প্রদানের পর মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছিলেন, “যদি তারা সমঝোতায় আসতে না চায়, তাহলে ইরানে বোমাবর্ষণ হবে। এমন মাত্রায় বোমাবর্ষণ হবে যে তা তারা কোনোদিন কল্পনাও করতে পারে নি।”
সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পের হুমকির উত্তরে বাকাই বলেন, “ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান গত পাঁচ দশক ধরে নিজেদের প্রতিরক্ষা বিষয়ক সক্ষমতা গড়ে তুলছে। যদি কখনও কোনো প্রকার হামলা ঘটে, তাহলে ইরান তার শক্ত জবাব দেবে।
প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে পরমাণু শক্তির ব্যবহার পর্যবেক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) জানিয়েছিল, ইরান ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করছে। যদি এই ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা ৯০ শতাংশে উন্নীত করা হয়, সেক্ষেত্রে অনায়াসে এই ইউরেনিয়াম ব্যবহার করে অন্তত ৬টি পরমাণু বোমা বানানো সম্ভব।
২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ে এর আগে ২০১৭ সালে ট্রাম্প যখন প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় এসেছিলেন। তখন ইরানের সঙ্গে জ্যাকোপা নামে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেই চুক্তির শর্ত ছিল, ইরান যদি পরমাণু প্রকল্প থেকে সরে আসে, সেক্ষেত্রে দেশটির ওপর থেকে একে একে যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে।
কিন্তু পরে ২০১৭ সালে নিজের প্রথম মেয়াদের ক্ষমতা গ্রহণের পর যুক্তরাষ্ট্রকে এই চুক্তি থেকে বের করে নিয়েছিলেন ট্রাম্প। তিনি বলেছিলেন, “এই চুক্তি ত্রুটিপূর্ণ, একপেশে এবং এর কোনো ভবিষ্যৎ নেই।”
সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি
এসএমডব্লিউ