মণিপুরে সহিংসতার তদন্ত চায় কংগ্রেস

ভারতের মণিপুর রাজ্যে গত প্রায় দু’ বছর ধরে কেন সংঘাত-সহিংসতা চলল, কেন সহিংসতা থামানো গেল না এবং সংঘাত থামাতে কেন্দ্রীয় সরকার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে— সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে এ বিষয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার ভারতের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বক্তব্য দেন খাড়্গে। নিজ বক্তব্যে তিনি বলেন, “প্রায় ২ বছর ধরে মণিপুর সহিংসতার আগুনে জ্বলে-পুড়ে ছারখার হলো, এবং আমরা দেখলাম সরকার এই সহিংসতা থামাতে ব্যর্থ হলো। দুই বছরের সহিংসাতায় মণিপুরে নিহত হয়েছে ২৬০ জন এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ। অনেক পরিবার ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। তারপরও বিজেপি দৃশ্যত নিশ্চুপ থেকে এসব দেখেছে। মণিপুরের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে, জিএসটি সংগ্রহ প্রায় বন্ধ। এখনও রাজ্যটি সেই ভয়াবহ সহিংসতার রেশ থেকে বের হতে পারেনি।”
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
বিজেপি শুধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে রক্ষায় ব্যস্ত থেকেছে এ দু’বছর। প্রধানমন্ত্রী এ দু’বছরে একবারও মণিপুর সফরে যাননি। কেন যাননি? পুরো মণিপুর যখন জ্বলছিল, তখন তিনি বিভিন্ন দেশে সফর করে বেরিয়েছেন, কিন্তু মণিপুরে পা রাখেননি। বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধীসহ অনেক রাজনীতিক, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক, বিভিন্ন এনজিও মণিপুর সফরে গিয়েছেন— কিন্তু নরেন্দ্র মোদির সময় হয়নি।”
“আমরা জানতে চাই— তিনি কেন যাননি? তার সময় হয়নি কেন? সংঘাত নিরসনে প্রধানমন্ত্রী ও তার নেতৃত্বাধীন সরকার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে? এসব প্রশ্নের উত্তর জাতির সামনে তুলে ধরার জন্য আমরা মণিপুরে সহিংসতার তদন্ত দাবি করছি।”
বিজ্ঞাপন
জাতিগত বৈচিত্রে ভরপুর মণিপুরে ২০২৩ সনালের মে মাসে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায়ের হিন্দু এবং অপেক্ষাকৃত সংখ্যালঘু ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী কুকি-চিন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। ওই মাসে রাজ্যের সংখ্যাগুরু মেইতেই জাতিগোষ্ঠীকে ‘তফসিলি’ জাতি হিসেবে ঘোষণা করে মণিপুর হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে ভারতের সংবিধান অনুসারে সরকারি চাকরি এবং ভারতের জাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মেইতেইদের জন্য কোটা ব্যবস্থা চালুর নির্দেশও দেন আদালত।
আদালতের এই আদেশে ক্ষুব্ধ হয় রাজ্যটির সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী কুকি এবং সেই দিন থেকেই প্রতিবাদ শুরু হয় রাজধানী ইম্ফলসহ বিভিন্ন এলাকায়। অল্পসময়ের মধ্যেই এই প্রতিবাদ রূপ নেয় ভয়াবহ জাতিগত দাঙ্গায়।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মণিপুরে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করা হয়। এর মধ্যে দিয়ে সমাপ্তি ঘটে দুই বছরব্যাপী এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতের।
সূত্র : এনডিটিভি অনলাইন
এসএমডব্লিউ