গুপ্তচরবৃত্তি নিয়ে বাইডেনের কাছে জবাব চান মেরকেল-ম্যাক্রোঁ
জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মেরকেলসহ ইউরোপীয় নেতাদের পেছনে গোয়েন্দাগিরি করছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন গোয়েন্দাদের এই গুপ্তচরবৃত্তিতে সাহায্য করেছে ডেনমার্কের গোয়েন্দারা। বিষয়টি নিয়ে এবার সরব হয়েছেন অ্যাঞ্জেলা মেরকেল এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ। গুপ্তচরবৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ডেনমার্কের কাছে জবাব চেয়েছেন তারা।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, মার্কিন গুপ্তচরবৃত্তি নিয়ে সোমবার (৩১ মে) প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর সঙ্গে কথা বলেন মেরকেল। তারপরই গোটা ঘটনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং ডেনমার্কের কাছে জবাব চান ফরাসি প্রেসিডেন্ট। ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বক্তব্যকে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলরও। তবে এই ইস্যুতে মেরকেলের প্রতিক্রিয়া খানিকটা নরম বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
গত রোববার বিস্ফোরক তথ্য সামনে আনে ইউরোপের একাধিক গণমাধ্যম। সেখানে বলা হয়, ২০১২ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এনএসএ জার্মানিসহ একাধিক ইউরোপীয় রাষ্ট্রের নেতার ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করেছিল। এ কাজে তারা সাহায্যে নিয়েছিল ডেনমার্কের গুপ্তচর সংস্থা এফই-র। গুপ্তচর সংস্থার এক সূত্রই গোটা বিষয়টির তথ্য ইউরোপের কয়েকটি গণমাধ্যমের হাতে তুলে দেয়। এরপর অনুসন্ধান করে বিস্ফোরক তথ্য সামনে নিয়ে আসে গণমাধ্যমগুলো।
তথ্য সামনে আসতেই রীতিমতো তোলপাড় সৃষ্টি হয়। রোববার এই ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও সোমবার সকাল পর্যন্ত কোনো ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন জার্মান চ্যান্সেলর। পরে মাঁক্রোর সঙ্গে কথা হওয়ার পরে তিনি মুখ খোলেন। দ্রুত এর উত্তর চেয়েছেন তিনি।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাঁক্রোর বক্তব্য, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ। তা সত্ত্বেও ওয়াশিংটন কেন ইউরোপের নেতাদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করল তার জবাব দিতে হবে। অন্যদিকে, ডেনমার্ক ইউরোপের রাষ্ট্র। জার্মানি ও ফ্রান্স উভয়েরই বন্ধু প্রতিবেশী। ফলে তাদেরকেও উত্তর দিতে হবে, কেন যুক্তরাষ্ট্রের গুপ্তচরবৃত্তিতে সাহায্য করা হলো।
যদিও বিষয়টি নিয়ে আগেই পদক্ষেপ নিয়েছিল ডেনমার্ক। ২০২০ সালে গুপ্তচর সংস্থার সেই সময়কার কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু কেন সরানো হচ্ছে, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
স্নোডেনও টুইট করে জানিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউরোপ সফরে গেলেই তাকে এই প্রশ্নের সামনে দাঁড়াতে হবে। গোটা ঘটনার সঙ্গে বাইডেনও যুক্ত ছিলেন বলে তার অভিযোগ।
শুধু জার্মানি এবং ফ্রান্স নয়, স্ক্যানডেনেভিয়ার দেশগুলোও বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সুইডেন এবং নরওয়ের রাষ্ট্রপ্রধানরাও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। ডেনমার্কের কাছে জবাব চেয়েছে তারাও।
সকলেরই বক্তব্য, প্রতিবেশী রাষ্ট্র হয়ে ডেনমার্ক কীভাবে এ কাজ করল? ডেনমার্ক অবশ্য এ বিষয়ে এখনও মুখ খোলেনি।
সূত্র: ডয়চে ভেলে
টিএম