কবে থেকে কার্যকর হবে ট্রাম্পের নতুন শুল্ক?

আন্তর্জাতিক বিশ্বের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত ‘বাণিজ্যিক ভারসাম্যহীনতা’ কাটাতে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ওপর যে নতুন শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প, তা কবে থেকে কার্যকর হবে— জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
বুধবার এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেসব দেশের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, তা কার্যকর করা হবে আগামী ৫ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় রাত ১২ টা ১ মিনিট থেকে। আর যেসব দেশের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশের বেশি শুল্ক ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প, সেই নতুন শুল্ক কার্যকর হবে আগামী ৯ এপ্রিল মার্কিন স্থানীয় সময় রাত ১২ টা ১ মিনিট থেকে।
ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় বুধবার বিকেল ৪টায় (বাংলাদেশ সময় বুধবার দিবাগত রাত ২টা) হোয়াইট হাউসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর নতুন রপ্তানি শুল্ক ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
হোয়াইট হাউজের রোজ গার্ডেনে উপস্থিত সাংবাদিকসহ সমবেতদের উদ্দেশে বক্তব্যের শুরুতেই ট্রাম্প বলেন, “আজ খুব ভালো খবর থাকবে।” এ সময় দর্শক সারি থেকে করতালি দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানানো হয়।
আরও পড়ুন
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ২ এপ্রিলকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেন ট্রাম্প। নতুন শুল্ক আরোপকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বুধবার বাংলাদেশসহ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে— এমন সব দেশের পণ্যের পূর্বকার রপ্তানি শুল্ক বাতিল করে নতুন শুল্ক ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশ করা হয়েছে। এতদিন দেশটিতে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ করে শুল্ক ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সময়ের পার্থক্য ১১ ঘণ্টা। সেই হিসেবে এবং হোয়াইট হাউসের ঘোষণা অনুসারে, বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত নতুন শুল্ক কার্যকর হবে বাংলাদেশের স্থানীয় সময় ১০ এপ্রিল সকাল ১১টা থেকে।
প্রসঙ্গত, এই উপমহাদেশভুক্ত ৩ দেশের মধ্যে বাংলাদেশি পণ্যের ওপরই সবচেয়ে বেশি শুল্ক জারি করেছেন ট্রাম্প। উপমহাদেশের অপর দুই দেশ ভারতের ওপর ২৬ শতাংশ ও পাকিস্তানের পণ্যের ওপর ২৯ শতাংশ শুল্ক জারি করা হয়েছে।
এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ, ভিয়েতনামের পণ্যের ওপর ৪৬ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার পণ্যে ৪৪ শতাংশ, তাইওয়ানের পণ্যে ৩২ শতাংশ, জাপানের পণ্যে ২৪ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যে ২৫ শতাংশ, থাইল্যান্ডের পণ্যে ৩৬ শতাংশ, সুইজারল্যান্ডের পণ্যে ৩১ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার পণ্যে ৩২ শতাংশ, মালয়েশিয়ার পণ্যে ২৪ শতাংশ, কম্বোডিয়ার পণ্যে ৪৯ শতাংশ, যুক্তরাজ্যের পণ্যে ১০ শতাংশ, দক্ষিণ আফ্রিকার পণ্যে ৩০ শতাংশ, ব্রাজিলের পণ্যে ১০ শতাংশ, সিঙ্গাপুরের পণ্যে ১০ শতাংশ, ইসরায়েলের পণ্যে ১৭ শতাংশ, ফিলিপাইনের পণ্যে ১৭ শতাংশ, চিলির পণ্যে ১০ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ার পণ্যে ১০ শতাংশ, তুরস্কের পণ্যে ১০ শতাংশ, কলম্বিয়ার পণ্যে ১০ শতাংশ আরোপ করা হয়েছে।
অন্যান্য যেসব দেশের পণ্যের ওপর বেশি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে মিয়ানমারের পণ্যে ৪৪ শতাংশ, লাওসের পণ্যে ৪৮ শতাংশ এবং মাদাগাস্কারের পণ্যের ওপর ৪৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
পাল্টা এই শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থানে থাকা ট্রাম্প বলেছেন, বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কখনো কখনো “বন্ধু শত্রুর চেয়ে খারাপ হয়।”
সূত্র : এএফপি
এসএমডব্লিউ