৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় ভারতের অর্থনীতি
করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্বের বিপর্যস্ত দেশগুলোর তালিকায় ওপরের দিকেই রয়েছে ভারতের নাম। মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবা সংকট, অক্সিজেন সংকট-সহ দৈনিক বিপুল সংখ্যক মানুষের মৃত্যু ও সংক্রমণে এমনিতেই দেশটি ‘বিধ্বস্ত’।
তবে এখানেই যেন শেষ নয়। করোনা মহামারির ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে ভারতের অর্থনীতির ওপরও। মহামারির শুরু থেকে পড়া এই প্রভাবে গত ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পড়েছে দেশটির অর্থনীতি।
করোনা মহামারি গোটা বিশ্বের অর্থনীতির ওপরই মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। ইউরোপ ও পশ্চিমা বিশ্বের অনেক দেশ এই প্রভাব কাটিয়ে উঠলেও অনেক দেশ এখনও রীতিমতো সংগ্রাম করছে। তবে করোনা মহামারির কারণে ভারতের অর্থনীতি যে মুখ থুবড়ে পড়েছে, তারই প্রমাণ মিলেছে দেশটির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দফতরের প্রকাশিত তথ্যে।
গত ২০২০-২১ অর্থবছরে ভারতের অর্থনীতি ৭ দশমিক ৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। গত চার দশকের মধ্যে এটা সর্বোচ্চ। অর্থাৎ গত ৪০ বছরেরও বেশি সময়ে দেশটির অর্থনীতিতে এমন খারাপ সময় আসেনি। অবশ্য জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত চতুর্থ ত্রৈমাসিকে ভারতের গড় দেশজ উৎপাদন ১ দশমিক ৬ শতাংশ বাড়লেও তা আশানুরূপ নয় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
করোনা মহামারি শুরুর পর গত বছরের মার্চে দেশজুড়ে লকডাউন আরোপ করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। পরে ধীরে ধীরে লকডাউন শিথিল করা শুরু হওয়ার পর থেকেই নরেন্দ্র মোদির সরকার দাবি করতে থাকে যে, দেশের অর্থনীতির দ্রুত পুনরুদ্ধার ঘটছে।
তবে মোদি সরকারের সেই দাবিকেই কার্যত ভুল বলে প্রমাণ করল চতুর্থ ত্রৈমাসিকে দেশটির জিডিপি বৃদ্ধির পরিসংখ্যান। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত পুরোদমে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু ছিল। তা সত্ত্বেও এই পরিসংখ্যান বলে দিচ্ছে, এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ভারতের অর্থনীতি।
করোনা মহামারি শুরুর পর গত অর্থবছরের প্রথম ত্রৈমাসিকেই ভারতের আর্থিক প্রবৃদ্ধির হার মাইনাস ২৪ শতাংশে নেমেছিল। পরের ত্রৈমাসিক থেকে অর্থনীতি একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল ঠিকই, কিন্তু আগের অর্থবছরের সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারল না দেশটি।
অবশ্য ভারতের পরিসংখ্যান দফতর আগেই পূর্বাভাস দিয়েছিল যে, ২০২০-২১ অর্থবছরে ভারতের অর্থনীতি ৮ শতাংশ সংকুচিত হবে। তবে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার পূর্বাভাসে এই সংকোচনের হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।
টিএম