তুরস্কে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ, ৯ সাংবাদিকসহ সহস্রাধিক গ্রেপ্তার

তুরস্কের ইস্তাম্বুলের মেয়র একরাম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের পর দেশজুড়ে চলা গত পাঁচদিনের বিক্ষোভ থেকে সহস্রাধিক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইয়ারলিকায়া বলেছেন, বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত এক হাজার ১৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে তুরস্কের কর্তৃপক্ষ।
বিজ্ঞাপন
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতা ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত বুধবার গ্রেপ্তার করা হয় দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইমামোগলুকে। তার গ্রেপ্তারে এক দশকেরও বেশি সময় পর তুরস্কে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। রোববার দেশটির একটি আদালত ইমামোগলুর বিচার মুলতবি ঘোষণার পর দুর্নীতির অভিযোগে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
যদিও দেশটির বিরোধীদলীয় এই নেতা তার বিরুদ্ধে আনা সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সড়কে জনসমাগমের ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তুরস্কের বেশিরভাগ শহরে বিক্ষোভ করছেন হাজার হাজার মানুষ।
বিজ্ঞাপন
ইমামোগলুর মুক্তির দাবিতে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ এখন সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। রোববার রাতেও টানা পঞ্চম দিনের মতো দেশটির বেশিরভাগ শহরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইয়ারলিকায়া বলেছেন, ‘‘বিক্ষোভ চলাকালীন অন্তত ১২৩ জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। সরকার ‘‘রাস্তায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’’ বরদাশত করবে না বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন তিনি।
সোমবার তুরস্কের সাংবাদিক ইউনিয়ন বলেছে, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৯ জন সাংবাদিকও রয়েছেন। এই সাংবাদিকরা কয়েকটি শহরে রাতভর বিক্ষোভের সংবাদ পরিবেশন করেছিলেন। তবে সাংবাদিকের কী কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে তা পরিষ্কার হওয়া যায়নি। গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের মধ্যে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির একজন আলোকচিত্রীও রয়েছেন বলে এক্সে দেওয়া পোস্টে জানিয়েছে তুরস্কের সাংবাদিক ইউনিয়ন।
বিজ্ঞাপন
ইমামোগলু নেতৃত্বাধীন তুরস্কের প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) মেয়রের গ্রেপ্তারের বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের আহ্বান জানিয়েছে। সিএইচপির এই নেতার গ্রেপ্তারকে ‘‘রাজনীতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অগণতান্ত্রিক’’ বলে আখ্যা দিয়েছে দলটি।
নিজের বিরুদ্ধে আনা অকল্পনীয় অভিযোগ অস্বীকার করে এর নিন্দা জানিয়েছেন ইমামোগলু। পাশাপাশি দেশজুড়ে বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
গত সপ্তাহে এরদোয়ান বলেছিলেন, তার সরকার ‘‘ভাঙচুর’’ কিংবা ‘‘রাস্তার সন্ত্রাসের’’ কাছে ‘‘আত্মসমর্পণ’’ করবে না। তিনি বলেন, ‘‘আমরা জনসাধারণের শৃঙ্খলায় কোনও ব্যাঘাত ঘটানো হলে তা মেনে নেব না।’’ মেয়র ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের পেছনে রাজনৈতিক কোনও উদ্দেশ্য নেই বলে দাবি করেছেন তিনি। একই সঙ্গে দেশের বিচারবিভাগ স্বাধীন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস