যে কারণে কোভিড-২৬ ও কোভিড-৩২ মহামারির আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের
টানা দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে কোভিড-১৯ মহামারি। এই ভাইরাসের তাণ্ডবে কার্যত সারা বিশ্বই বিপর্যস্ত। বিশ্বের মোটামুটি সকল দেশেই টিকাদান কর্মসূচি চললেও কবে নাগাদ এই ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা পাবে বিশ্ব, এর নির্দিষ্ট তথ্য যেন কারও হাতেই নেই। অবশ্য চলমান কোভিড-১৯ মহামারির কোনো সমাপ্তি দেখা না গেলেও ভবিষ্যতে কোভিড-২৬ এবং কোভিড-৩২ মহামারির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা।
একে তো চলমান মহামারিতেই মানুষ বিপর্যস্ত, তার ওপর হঠাৎ কেন বিশেষজ্ঞদের এই আশঙ্কা! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস প্রথম ছড়িয়েছিল চীনের উহান শহর থেকে। কিন্তু এই ভাইরাসের উৎস কোথায়, সেই বিষয়ে এখনও কোনো তথ্য জানায়নি দেশটি।
এমনকি ভাইরাসের উৎস নির্ধারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বিশেষজ্ঞদেরও চীন সহযোগিতা করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। উল্টো বেইজিংয়ের দাবি, তাদের দেশ থেকে করোনা ছড়ায়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত কোভিড ১৯ এর উৎস খুঁজে না পেলে ভবিষ্যতে কোভিড-২৬ ও কোভিড-৩২ এর আশঙ্কা রয়েছে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফএও) কমিশনার হিসেবে দায়িত্বপালন করেছিলেন স্কট গটলিয়েব। বর্তমানে তিনি দেশটির ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ফাইজারের বোর্ডের চেয়ারম্যান।
তিনি বলেছেন, চীনের উহান শহরে অবস্থিত উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির (ডব্লিউআইভি) গবেষণাগার থেকে ছড়িয়ে থাকতে পারে এই ভাইরাস। এই দাবি নাকচ করার মতো কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি বেইজিং। এটা উদ্বেগজনক।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস চিলড্রেনস হসপিটাল ফর ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্ট’র কো-ডিরেক্টর পিটার হটেজের আশঙ্কা, করোনার উৎস না জানতে পারলে ভবিষ্যতে আরও বড় মহামারির আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা কোভিড-১৯ সম্পর্কে সব তথ্য না পেলে ভবিষ্যতে হয়তো কোভিড-২৬ ও কোভিড-৩২-এর মতো মহামারি দেখা দিতে পারে।
এছাড়া ৯০ দিনের মধ্যে করোনাভাইরাসের উৎস খুঁজে বের করতে গত বুধবার মার্কিন গোয়েন্দাদের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। প্রথমে বলা হয়েছিল, উহান শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত হুনান সি-ফুড মার্কেট থেকেই প্রথম করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটে।
দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম যে ব্যক্তি মারা যান, তার ওই মার্কেটে নিয়মিত যাতায়াত ছিল।
৬১ বছর বয়স্ক ওই ব্যক্তি যখন মারা যান, তখনও এই রোগের নাম নির্দিষ্ট করা হয়নি। চীনের সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘অপরিচিত ধরনের নিউমোনিয়ায়’ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তিনি।
করোনায় সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত যুক্তরাষ্ট্র প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে, চীন থেকে গোটা বিশ্বে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তো একধাপ এগিয়ে গিয়ে কোভিড-১৯ কে ‘‘চীনা ভাইরাস’’ হিসেবে অভিহিত করেন।
যদিও, চীন এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। দেশটির দাবি, করোনাভাইরাসের উত্স নির্দিষ্ট কোনও একটা জায়গা নয়। একাধিক উত্স থেকে কোভিড-১৯ ভাইরাস সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।
সূত্র: ব্লুমবার্গ
টিএম