মেক্সিকো উপসাগরের নাম না পাল্টাতে গুগল ম্যাপের দ্বারস্থ মেক্সিকো

মেক্সিকো উপসাগর নিয়ে উত্তর আমেরিকার দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর মধ্যে চলছে রশি টানাটানি। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবহারকারীদের জন্য গুগল ম্যাপে মেক্সিকো উপসাগর ‘গালফ অব মেক্সিকো’র নাম বদলে ‘গালফ অব আমেরিকা’ রাখবে এর মূল কোম্পানি গুগল।
বিজ্ঞাপন
এরপরই এই উপসাগরের নাম না পাল্টাতে গুগল ম্যাপের দ্বারস্থ হয়েছে মেক্সিকো। মেক্সিকান প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে গুগলকে চিঠিও লিখেছেন। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়ে মেক্সিকান প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শিনবাউম গুগলকে একটি চিঠি লিখেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গালফ অব মেক্সিকোর নাম বদলানোর পর এই বিষয়ে গুগল তাদের সিদ্ধান্ত নেয় এবং এরপরই সংস্থাটিকে চিঠি লিখলেন শিনবাউম।
বিজ্ঞাপন
এর আগে চলতি সপ্তাহেই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে এক বিবৃতি দিয়ে গুগল জানিয়েছিল, আমেরিকার ভেতরে গুগল ম্যাপে গালফ অব মেক্সিকোর নাম বদলে গালফ অব আমেরিকা করা হবে। কিন্তু আমেরিকার বাইরে এই বদল অন্যরকম হবে।
মেক্সিকোতে পুরোনো নাম অর্থাৎ, গালফ অব মেক্সিকোই রাখা হবে। আমেরিকা এবং মেক্সিকোর বাইরে ম্যাপে দুটি নামই রাখা হবে অর্থাৎ, সেখানে গালফ অব মেক্সিকো এবং গালফ অব আমেরিকা— দুটি নামই রাখা হবে পাশাপাশি।
বিজ্ঞাপন
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত সপ্তাহে জানিয়েছে, তারা সরকারিভাবে গালফ অব মেক্সিকোর নাম বদলে গালফ অব আমেরিকা রেখেছে। সরকারি সমস্ত নথিপত্রে এই পরিবর্তন পরিমার্জন করা হচ্ছে। অবশ্য ক্ষমতায় এসেই গালফ অব মেক্সিকোর নাম যে তিনি পরিবর্তন করবেন, তা আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন ট্রাম্প। সেই মতো গত সপ্তাহেই মার্কিন প্রশাসন আনুষ্ঠানিকভাবে নাম পরিবর্তন করে।
বিবিসি বলছে, সামুদ্রিক কোনও স্থানের নামকরণের জন্য নির্দিষ্ট কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা নেই। মেক্সিকোর যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্র আইনত এই উপসাগরের নাম পরিবর্তন করতে পারে না কারণ সাগরের আইন সম্পর্কিত জাতিসংঘের কনভেনশন অনুযাযী, কোনও দেশের সার্বভৌম অঞ্চল উপকূলরেখা থেকে ১২ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকাটি সেই দেশের।
মেক্সিকান প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শিনবাউম বলছেন, “(নাম পরিবর্তন) শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলরেখা থেকে ১২ নটিক্যাল মাইল দূর পর্যন্তই হতে পারে।”
আরও পড়ুন
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য বিবিসির অনুরোধে গুগল এখনও সাড়া দেয়নি বলেও জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। অবশ্য আমেরিকার যুক্তি, মেক্সিকো এবং আমেরিকা প্রায় সমপরিমাণ সীমান্ত উপভোগ করে গালফ অব মেক্সিকোর ধারে। ফলে এর নামের সঙ্গে আমেরিকাও যুক্ত হওয়া উচিত।
আর এতে করে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি উপহাস করে বলেছেন, আমেরিকা যা-ই করুক, গোটা পৃথিবীর কাছে ওই এই উপসাগরটি গালফ অব মেক্সিকো হিসেবেই পরিচিত থাকবে। শুধু তা-ই নয়, তিনি বলেছেন— এভাবে নাম বদলাতে থাকলে উত্তর আমেরিকার নাম বদলে মেক্সিকান আমেরিকা রাখা উচিত। কারণ একসময় এই অঞ্চলকে এই নামেই ডাকা হতো।
এদিকে উত্তর আমেরিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ আলাস্কার ডেনালির নামও পরিবর্তন করে মাউন্ট ম্যাকিনলে করা হয়েছে। ২০১৫ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এই শৃঙ্গের নাম পরিবর্তন করে ডেনালি রেখেছিলেন। কারণ, ওই অঞ্চলের স্থানীয় মানুষ ওই শৃঙ্গটিকে ডেনালি বলেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প সেই নাম পরিবর্তন করে ফের পুরোনো নাম রেখেছেন।
গুগল জানিয়েছে, তারা গুগল ম্যাপে এই নামেরও পরিবর্তন করবে।
টিএম